ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা নেই মৌলভীবাজারে, বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ
Published : Monday, 15 January, 2024 at 5:36 PM Count : 123
কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে গোটা জনপদ। ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। দুইদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজারে। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও একপলকেও দেখা মেলেনি সূর্যের। হিমেল বাতাসের সাথে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্থ। ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতায় কাবু হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকায় সকাল থেকে দেখা মেলেনি সূর্যের।
সোমবার শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে জেলার কোথাও আকাশে রোদের দেখা না মেলায় ঠান্ডা বিরাজমান রয়েছে। রবিবার থেকে সোমবার বিকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ডেকে ছিল মৌলভীবাজারের আকাশ। বেলা বাড়ার সাথে কিছুটা কুয়াশা কাটলেও কমেনি শীত ও সূর্যের দেখা। সন্ধ্যায় মৃদু শীতল বাতাশে শীতের তীব্রতা বাড়তে পরে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। এবং আগামী দুই একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরো নিচে নামতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সড়জমিনে দেখা যায়, ঠান্ডায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে জেলার কয়েক হাজার চা শ্রমিক। রাত থেকে কনকনে ঠান্ডায় শীত নিবারণের জন্য তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন। বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে ঠান্ডা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন অনেক কৃষক। কনকনে ঠান্ডায় সময়মতো কাজে বের হতেও পারছেন না তারা। ছাড়িদিকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির ফোটার মতো পড়ছে কুয়াশা।
এমন অবস্থায় চা শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে। যার ফলে সর্বসাধারণের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষ, বাগানের চা শ্রমিকসহ খেটে খাওয়া মানুষজন। তীব্র শীত নিবারণে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার দিকে তাকিয়ে আছে চা শ্রমিকসহ ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। হাড়কাঁপানো শীতে শীতজনিত রোগ সর্দি-কাশি, ঠান্ডা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানিসহ শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে শিশু এবং বয়স্করা ভর্তি হয়েছেন জেলা-উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালে।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার রিক্সা চালক চনু মিয়া বলেন, বাক্কা কয়েক দিন থাকি (থেকে) খুব ঠান্ডা। মানুষ বাড়ি ঘর থাকি (থেকে) বার হর (হচ্ছে) না। বাজারো (বাজারে) মানুষ একবারে কম, রিকশার মাঝে মানুষ উঠেনা ঠান্ডা মনে করিয়া (করে)। এমন শীতর কারণে আমরাও বিপদে পড়েছি। সংসার চালাইতাম (চালাতে) না পেটো ভাত দিতাম রে বাবা বাক্কা চিন্তাত (চিন্তিত) আছি।
শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার পর্যবেক্ষক আনিস আহমেদ জানান, সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধরা হয়েছে। এমন আবহাওয়া আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এদিকে শীতের তীব্রতার সাথে বাড়ছে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডাজনিত ডায়রিয়া। কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এম মাহবুবুল আলম এসময়ে ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক শিশু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
মৌলভীবাজারে সপ্তাহে দুইবার প্রাইভেট ভাবে রোগী দেখেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার অধ্যাপক যোগিন্দ্র কুমার সিংস বলেন, প্রতিদিনই নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে বয়স্করা হাফানি ও স্বাশকষ্টে বেশি সমস্যায় ভুগছেন।
এসএস/এসআর