হিমেল বাতাসে কাঁপছে লালমনিরহাট
Published : Monday, 15 January, 2024 at 1:43 PM Count : 259
ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো হিমেল বাতাসে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের জনজীবনে। জেঁকে বসা শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল হতদরিদ্ররা। টানা এক সপ্তাহ ধরে চলা ঘন কুয়াশার কারণে ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এখানকার কৃষক।
সোমবার চলমান বৈরি আবহাওয়া নিয়ে রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবোল চন্দ্র জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারের পর থেকে কুয়াশা কেটে গিয়ে তাপমাত্রা খানিকটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরে একটা বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষজন বলছেন, ঠান্ডার কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। আর দিনের বেলা কৃষিকাজসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তার চরের প্রত্যন্ত গ্রাম হরিণচড়া এলাকার নিরাশা মিয়া বলেন, ঠান্ডার কারণে ঘরের বাইরে যাওয়া যায় না, আবার না গেলেও পেটে ভাত জোটে না।
মহিষখোচা ইউনিয়নের চর গোবরধন গ্রামের আনারুল বলেন, দিনে-রাতে খড় জ্বালিয়ে আগুন তাপাই, তবু শীত নিবারণ হয় না।
এদিকে, রোববার দুপুর দেড়টায় দেড় ঘন্টার জন্য সূর্যের দেখা পাওয়া গেছে লালমনিরহাটের আকাশে। টানা মেঘলা আকাশ আর ঘন কুয়াশার কারণে মাঠে থাকা ভুট্টা, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ সদ্য রোপণ করা বোরোর ক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আমবাড়ি এলাকার আলু চাষি একরামুল হক বলেন, রাত হলেই বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরে। এতে আলু গাছে ছত্রাক আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মড়ক লেগে ফলনের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে।
একই এলাকার নুরুজ্জামান বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় বালাইনাশক স্প্রে করছেন তিনি। এতে আবাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি এলাকার কৃষক নয়ন মিয়া বলেন, এই মুহুর্তে আলু, ফুলকপি, বোরো ধান আছে আমার জমিতে। কুয়াশার কারণে মড়ক দেখা দিলে উৎপাদন খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যাবে না।
লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, আবহাওয়ার আচরণের ওপর ফসলের উৎপাদন ও ব্যয় দুটোই নির্ভর করে। কুয়াশার পাশাপাশি যদি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয় তাহলে এর প্রভাবে ফসলি জমিতে রোগবালাই বেড়ে যাবে। তাতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
-এমএস/এমএ