শৈত্যপ্রবাহে জবুথুবু রাজশাহীর জনজীবন
Published : Sunday, 14 January, 2024 at 9:55 PM Count : 157
উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘনকুয়াশায় রাজশাহী অঞ্চলে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দিন-রাতে ঘন কুয়াশার আবরণে পথ-ঘাট ভিজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আচ্ছন্ন থাকছে পুরো অঞ্চল। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ফারাকও কমেছে। এতেই নামছে কনকনে শীত।
হাড়কাপানো ঠান্ডায় জবুথুবু এ অঞ্চলের জনজীবন। চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় রাজশাহীতে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সেই সঙ্গে শীতজনিত নানা জটিলতায় রোগিদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। উষ্ণতা পেতে শীত কাপড়ের দোকানগুলোতেও বেচাবিক্রি বেড়েছে।
রোববার সকাল ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এর আগের দিন শনিবার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে সর্বনিম্ন। এরআগে শুক্রবার উত্তরের হিমেল হাওয়ায় রাজশাহীতে হঠাৎ তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছিলো। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি।
ঘন কুয়াশায় দুপুর গড়িয়ে কিছু সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল বাতাসে হাঁড়কাপানো ঠান্ডা ছিলো সারাদিনই। হঠাৎ তাপমাত্রার এমন নিম্নমুখি আচরণ জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। দিনের স্বাভাবিক চলাফেরায় বাঁধা সৃষ্টি করছেন এই ঠান্ডা। ছিন্নমূল ও খেটে-খাওয়া মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ উপজেলা সদর হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গত শনিবার ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছিলো ৬২ জন। আর রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৭৩ জন। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বাড়তি ব্যবস্থাপনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেও বৃদ্ধ ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে শিশু ও বয়স্ক মানুষের বের না হওয়াই ভালো। এছাড়া অন্যদেরও সতর্ক থাকতে হবে।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, উপজেলা পর্যায়ে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে ভর্তি রোগীর চেয়ে আউটডোর রোগীর সংখ্যা বেশি। আর পরিস্থিতি খুব খারাপ, এমনটা না। এ সময়টায় রোগী কিছুটা বাড়ে। সে রকমভাবে ব্যবস্থাপনাও করা আছে।
এদিকে, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বেড়েছে। মহানগরীর শিরোইল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ছিন্নমূল মানুষদের অনেকেই কষ্ট করে শীত নিবারণ করছেন।
দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন শ্রমজীবীরাও। এদিকে সকালে কথা হয় নির্মাণ শ্রমিক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, এই শীতে কাজ করা অনেক কষ্টের। কিন্তু জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা মাড়িয়েই ভোরেই কর্মক্ষেত্রে যেতে হচেছ।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, তাপমাত্রা সামনে আরো কমতে পারে। আকাশে মেঘ ও ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্যের দেখা কম পাওয়া যাচ্ছে। ঘণ্টায় ৩ নটিক্যাল মাইল বেগে হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভুত হচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতা রয়েছে ৯৬ শতাংশ।
আরএইচএফ/এসআর