শীতে বিপর্যস্ত তেঁতুলিয়া
Published : Saturday, 13 January, 2024 at 1:21 PM Count : 129
ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। শেষ পৌষে দাপট শুরু করেছে মাঘের শীত। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত এখানকার জনপদ। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা সূর্য। ভোর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের পেশাজীবী, পাথর, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে নানা শ্রমজীবী মানুষ। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেড়িয়েছেন নিম্নআয়ের পেশাজীবীরা। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপের কারণে ক্ষেত খামারে কাজ করতে পারছেন না।
পাথর শ্রমিক ফিরোজা খাতুন বলেন, কুয়াশা থাকলেও করার কিছু নাই ভাই। আমরা গরীব মানুষ। ঠান্ডায় তো পেটে ভাত দেবে না। গত দুই দিন ধরে কাজ করতে পারিনি। আজ বাধ্য হয়েই কাজে বেড়িয়েছি। কাজ করলে পেটে ভাত জুটবো।
দিনমজুর আয়নাল হক বলেন, খুব ঠান্ডা। কিন্তু কি করবো। দিনমজুরী করে সংসার চলে। তাই কুয়াশা আর ঠান্ডার মধ্যেই কাজ করতে যাচ্ছি। কাজ না করলে চলমু কেমন করে।
ভ্যানচালক আলী হাসান বলেন, একদিকে ঠান্ডা, তার মধ্যে ঘন কুয়াশা। কুয়াশার কারণে সহজে ভ্যানে চড়তে চায় না কেউ। তাই ভাড়া মারতে পারছি না। কয়েকদিন ধরেই ভাড়া নেই। গতকাল সারা দিনে মাত্র ৫০ টাকা ভাড়া মারছিলাম। এটা দিয়ে কি সংসার চলবে। কুয়াশার মধ্যেই সকালে ভ্যান নিয়ে বের হলাম। আল্লাহ'র রহমত থাকলে কামাই হবে।
এদিকে, শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
জেলার প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পঞ্চগড়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মিলছে না সূর্য। গতকাল বিকেলে সূর্য দেখা গেলেও সে রোদে ছিল না উষ্ণতা। বিকেল থেকেই আবার হিমেল বাতাস বইছে। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সে অনুপাতে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে।
-এসকে/এমএ