For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

চারদিন সূর্যের দেখা নেই তেঁতুলিয়ায়, শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

Published : Thursday, 11 January, 2024 at 12:24 PM Count : 162


চারদিন ধরেই কুয়াশায় ঢাকা উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। দেখা নেই সূর্যের। হিমেল হাওয়ায় ঝরছে কুয়াশার বরফ শিশির। এমন বৈরি পরিবেশের প্রকট ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে উত্তরের জেলার মানুষ। কাঁপছে শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সবাই। ঠান্ডার কারণে চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।   

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর তিন ঘন্টা আগে ভোর ৬ টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেনির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বুধবার (১০ জানুয়ারী) ১২ ডিগ্রি, মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারী) ১১ দশমিক ৬, সোমবার (৮ জানুয়ারী) ১৩ দশমিক ৮ , রোববার (৭ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ১, শনিবার (৬ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৭, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ৪, বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ৮ দশমিক ৫, বুধবার (৩ জানুয়ারি) ৭ দশমিক ৪, মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) ১০ দশমিক ৭ ও সোমবার (১ জানুয়ারি) ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চতুর্থ দিনের মতো ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় বৈরি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সকালে ঘন কুয়াশা দেখা না গেলেও মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। এতে করে হিমশীতলের ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের পেশাজীবিরা। পাথর-চা শ্রমিক, দিনমজুর, থেকে নানান শ্রমজীবী মানুষ। পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কেউ নদীতে পাথর তুলতে, কেউ পাথর ভাঙ্গা কাজে আবার কেউ চা বাগানে বরফ ঝরা শিশির মাখা পাতা কাটতে কাজে বেরিয়েছেন। পেটের ক্ষুধা ও পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণে শীতও হার মানছে এই মানুষদের। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপের কারণে খেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। বিভিন্ন জায়গায় কাগজের কাটন, টায়ার ও কাগজে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা যায়।

স্থানীয়রা জানান, আজকে নিয়ে গত চারদিন ধরে সকাল থেকে দেখা মিলছে না সূর্যের। এতে করে পরিবারসহ বিপাকে পড়েছে গৃহপালিত প্রাণিরাও। ভোর-সকালে কাজ করা যাচ্ছে না। কাজ করতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। ছেলে-মেয়েরাও ঠিকমত পড়ালেখা করতে পারছে না। সন্ধ্যার পর থেকে পুরো রাত বরফ হয়ে উঠে। ঘরের আসবাবপত্র, বিছানাপত্র, ঘরের মেঝে পর্যন্ত স্পর্শ করলে বরফের মতো ঠান্ডা মনে হয়। ঘরের গৃহিনীদের কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। আয় রোজগার কমে যাওয়ায় অনেকে পরিবারের কথা চিন্তা করেই এই হাড়কাঁপা শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেড়িয়েছেন। 

নদীতে কাজ করার সময় কয়েকজন পাথর শ্রমিক বলেন, প্রচন্ড শীত হলেও কিছু করার নাই। কাজ না করলে খামু কী। ঠান্ডায় ঘরে বসে থাকলে তো পেটে ভাত যাবো না। পেটের ক্ষুধা তো শীত বুঝে না। তাই পরিবারের কথা চিন্তা করেই নদীতে পাথর তুলতে নামছি। এই পাথরই আমাদের রুটি-রুচি। কাজ না করলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে কষ্টে দিনযাপন করতে হয়।

এদিকে শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।

জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গত চারদিন ধরে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সূর্য। কুয়াশার কারণে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। গতকাল বুধবার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকেলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, সেটি শীতকালের। বাতাসের গতি বেগ বেশি হলে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। সে অনুপাতে এ অঞ্চলে এখন শীতের তীব্রতা বেশি হচ্ছে। গতকাল দিনের তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। 

এসকেডি/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,