ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা, অভিযানে যা পেল ভোক্তা অধিকার
Published : Friday, 5 January, 2024 at 10:50 AM Count : 3066
ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে জায়নামাজ, জমজম কূপের পানি, খেজুর, অলিভ অয়েলসহ বিভিন্ন প্রসাধনী বিক্রি করে আসছিল হারামাইন স্টোর ডট কম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকায় হারামাইন স্টোরে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযানের নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান, সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল এবং ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফারহানা ইসলাম অজন্তা। অভিযানে দেখা যায়, ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে রিয়াজুল জান্নাহ নাম করে জায়নামাজ বিক্রি করা, যথাযথ উৎস ব্যতিত পবিত্র জমজমের পানি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা, মেয়াদোত্তীর্ণ অলিভ অয়েল, পঁচা খেজুর বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা, আমদানিকারকের তথ্য ব্যতিত বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করেছে।
ভোক্তা স্বার্থ বিরোধী এসব অপরাধে হারামাইন স্টোরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় এবং জনস্বার্থে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনায় এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। মহাপরিচালক মহদয়ের কাছে তথ্য ছিল যে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে হারামাইন স্টোর নাম দিয়ে রিয়াজুল জান্নাহ এই পবিত্র নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন যাবত জায়নামাজ বিক্রি করে আসছিল। রিয়াজুল জান্নাহ এই নামটি ইসলাম ধর্মের সেন্টিমেন্টের সাথে জড়িত। এই ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে পূঁজি করে এই প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা করে আসছে।
তিনি বলেন, তারা যে জায়নামাজ বিক্রি করে এই সংক্রান্ত তথ্য যথাযথভাবে আমাদের কাছে উপস্থাপন করতে পারেনি। এই প্রতিষ্ঠান পবিত্র জমজমের পানি বিক্রি করেন বা একটার সঙ্গে একটা ফ্রি দেন। যা ব্যবসায়ীক স্বার্থে করা হয়। কিন্তু এই পানির সোর্স বলতে পারছে না। শুধু বলছেন ওমরা করতে যারা যান তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। ওমরাকারীদের কাছ থেকে মাত্র ৫ লিটার করে পানি নিয়ে এতো পানি সাপ্লাই দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এই বিষয়ে যথাযথ উত্তর দিতে পারেনি।
‘এছাড়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মেয়াদ শেষ হয়েছে বিপুল পরিমাণে অলিভ অয়েল বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। অনেক প্যাকেট খেজুরের মেয়াদ দেওয়া নেই এবং পঁচে নষ্ট হয়েছে। সেগুলোও বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করেছেন। পাশাপাশি ফ্রিজের মধ্যে বিপুল পরিমাণ খেজুর সহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী দেখতে পেলাম, যেগুলোও পঁচে নষ্ট হয়েছে। সেগুলোও বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করেছে। একই সাথে বিভিন্ন দেশ থেকে বিক্রির জন্য নানান ধরনের কসমেটিক্স নিয়ে আসা হয়েছে। যার কোনো বৈধ আমদানিকারক নেই। এই সকল অপরাধে এই প্রতিষ্ঠানটিকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সকল প্রকার কার্যক্রম জনস্বার্থে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।’
এসআর