For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বছরে রাজশাহীতে বাড়ছে ১০ হাজার মানুষ, বাড়ছে আবাসন চাহিদা

Published : Monday, 1 January, 2024 at 8:22 PM Count : 391


দেশের উত্তরাঞ্চলে পদ্মাপাড়ের প্রাচীন নগরী রাজশাহী। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও পরিকল্পিত নগরায়নের কারণে দেশের সবচেয়ে সুন্দর মহানগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে জেলা শহরটি।

শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ আধুনিক নাগরিক সুবিধার কারণে আশপাশের জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কর্মসূত্রে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষ স্থায়ী হচ্ছেন পদ্মাপাড়ের এ জনপদে। এতে মহানগরীতে গড়ে উঠছে হাজারো বহুতল ভবন।

নগর কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, ৯৭ বর্গকিলোমিটারের এ মহানগরীতে গায়ে গা লাগানো উঁচু ভবনের ছড়াছড়ি। একটু তাকালেই চোখে পড়ে নতুন নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ। ২০০৯ সাল থেকে বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় এ মহানগরীতে। সে সময় একমাত্র ১০তলা ভবন ছিল সিএ্যান্ডবি মোড়ে জীবন বীমা ভবন। মাত্র এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে বর্তমানে এ মহানগরীতে ১০ থেকে ২১তলা ভবন রয়েছে শতাধিক।
২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনায় দেখা গেছে, এ মহানগরীর জনসংখ্যা ৫ লাখ ৫৩ হাজারের মতো। গেল ১১ বছরে লোকসংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৫ হাজার।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল ওয়াকিল বলেন, কলকারখানা ও কর্মসংস্থান সেভাবে না হলেও শিক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা, প্রশস্ত সড়ক, রেল, আকাশপথের যোগাযোগ, পরিচ্ছন্নতা, নির্মল বাতাস এবং আধুনিক সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা এ মহানগরীকে করে তুলেছে জনবহুল।

মহানগরীর আশপাশের জেলার বাসিন্দারা যেমন আসছেন, তেমনি লেখাপড়ার সুবাদে বা কর্মসূত্রে অন্যান্য এলাকা থেকেও অনেকে এসে এখানে গড়ছেন আবাস। যে কারণে মহানগরীতে বেড়েই চলেছে আবাসনের চাহিদা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৬ হাজার মানুষের বাস। প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখানে নতুন করে বসতি গড়েন। তাদের আবাসস্থলের চাহিদা মেটাতে বাড়ছে বহুতল ভবনের সংখ্যা। কয়েকগুণ দাম বাড়লেও চিকিৎসক, শিক্ষক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও প্রবাসীরা কিনছেন জমি ও ফ্ল্যাট।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, রাজশাহী ‍দিনকে দিন সাজানো-গোছানা একটি শহরে পরিণত হচ্ছে। উন্নত বিশ্বের শহরগুলোর আদলে চলছে এর অবকাঠামো নির্মাণ কাজ। এখানকার যাপিত জীবন অনেক সহজ। পরিবেশ অনেক সুন্দর। জীবন-জীবিকা নির্বাহের ব্যয় বড় শহরগুলোর তুলনায় সহনীয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো। সব ধরনের লেখাপড়ার জন্য ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। রয়েছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাও।

তিনি জানান, এসব কারণেই মূলত এ মহানগরীকে মানুষ বাছাই করছে বসবাসের জন্য। জমি কিংবা ফ্ল্যাট কিনে কিনে বসতি গড়ছেন। বসবাসের জন্য একসাথে অনেকে বিনিয়োগ করায় বেড়ে গেছে জমি ও ফ্ল্যাটের দাম।

রাজশাহীর ভূমি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেক প্রবাসী যারা রাজশাহীর বাসিন্দা নয়, তারাও এখানে বিনিয়োগ করছেন। বসবাসের জন্য জমি কিনছেন, সমবায় ভিত্তিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।

রাজশাহী রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের (রেডা) সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাজী বলেন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) তালিকাভুক্ত ২৬টি ভবন নির্মাণপ্রতিষ্ঠান রাজশাহীতে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। গৃহনির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়লেও বর্তমানে এখানে শতাধিক ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। এসব ভবনের অধিকাংশ নির্মাণ হচ্ছে আলুপট্টি, সাগরপাড়া, চন্দ্রিমা, মহানন্দা, তেরখাদিয়া ও ভদ্রা আবাসিকসহ মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে।

তিনি আরও বলেন, মহানগরীতে প্রতি কাঠা জমি ৫ লাখ থেকে এক কোটি টাকা এবং প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাট কেনাবেচা হয় ৪ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। আর প্রতিবছর আবাসন খাতে আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নগর পরিকল্পনাবিদ বনি আহসান বলেন, মহানগরীর আয়তন বাড়িয়ে ১৩২ বর্গকিলোমিটারে উন্নীত করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে সিটি করপোরেশন। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়ে বর্ধিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে তারা একটি আধুনিক মহানগর গড়তে বদ্ধপরিকর।

এদিকে, মহানগরবাসীর সুবিধার্থে চালু হচ্ছে ফ্লাইওভার সদৃশ এলিভেটেড লেভেলক্রসিং। এতে কমবে দুর্ঘটনা। মহানগরীতে নির্মিত হয়েছে প্রথম অযান্ত্রিক যান চলাচলের সড়ক। এছাড়া মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ও সরকারি শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলছে।

রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সিটি করপোরেশনের সেবা আরও সম্প্রসারিত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে রাজশাহীর অবকাঠামো উন্নয়নে বেশকিছু বেশকিছু প্রজেক্ট চলমান আছে, এবং আরও কিছু প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া, মহানগরবাসীকে নাগরিক সুবিধা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


এফএ/এমবি


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,