ভোট যুদ্ধে দুই ভাই-বোন
Published : Wednesday, 20 December, 2023 at 4:11 PM Count : 291
কিশোরগঞ্জ- ১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে ভোট যুদ্ধে ভাই-বোন অবতীর্ণ হয়েছেন। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে সৈয়দ পরিবারের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু অপর চাচাত ভাই বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের সমর্থনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। ফলে ভোটযুদ্ধে এখন সহোদর ভাই-বোন মাঠে রয়েছে।
একই পরিবারের ভাই-বোন মাঠে থাকায় ভোটার ও সমর্থকরা এখন বিপাকে। কেননা তারা উভয়েই অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাই-বোন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর পর ২০১৯ সনের ২৮ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে তার বোন ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি একাদশ সংসদের এমপি নির্বাচিত হন। এতে করে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে বিব্রত। তবে ভোটাররা বলছেন, এদের মধ্যে থেকে যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নিবেন তারা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ডাঃ সৈয়দ জাকিয়া নূর লিপি। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কা এবং এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তার বড় ভাই বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম। তিনি ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এক পরিবারের দুই জন প্রার্থীর বিষয়টি নিয়ে এ আসনের দুই উপজেলা সদর-হোসেনপুরসহ জেলা জুড়ে হচ্ছে আলোচনা-সমালোচনা।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, বিগত ৫ বছরে উক্ত আসনের এমপি ডাঃ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি নেতাকর্মীদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ রাখেননি। তিনি গুটি কয়েক চামচা পরিবেষ্টিত হয়ে মাঝে মাঝে দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছেন। ফলে তৃণমূলের নেতাকর্মীগণ তার প্রতি বিরাগভাজন। তার বিরুদ্ধে গম, চাউল বিতরণের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
হোসেনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ হালিম বলেন, কিশোরগঞ্জ সদরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিবারের দুই ভাই-বোন প্রার্থী। এখন আমরা নেতাকর্মী হিসাবে অত্যন্ত দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগছি।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশে এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। জনগণ যাকে যোগ্য মনে করে তাকেই ভোট দিবে, সেখানে পরিবারের বিষয়টি মুখ্য নয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বিগ্রেডিয়াল জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, আমি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান। আমার রক্তে বেমাঈনি নেই। আওয়ামী লীগের রক্তের স্রোত বইছে। আমি বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কথা বলেই ভোট চাইবো। আমাকে যদি ভোটাররা যোগ্য মনে করেন তাহলে আশাকরি আমাকে ভোট দিবেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ আফজল বলেন, রাজনীতির শুদ্ধ পুরুষ খ্যাত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আমরা কিছুটা বিব্রত আছি কারণ, একই পরিবার থেকে দুইজন প্রার্থী হয়েছেন। তবে আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার যে দায়িত্ব-কর্তব্য আমি দলের বাইরেতো যেতে পারিনা। নৌকা আমাদের দলীয় প্রতীক। যেটা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক। দলীয় প্রতীকের বাইরে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হবে না।
এবিএম/এমবি