For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ট্রেনে আগুনে মা-ছেলের মৃত্যু, গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম

Published : Tuesday, 19 December, 2023 at 4:16 PM Count : 377

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মা ও ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় নেত্রকোণায় তাদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের বরুনা গ্রামের আবদুল মজিদের পুত্রবধূ নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (৩)।

দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া চারটি মৃতদেহ সকাল ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেনের তিনটি বগি। আগুনে মা ও ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি জানার পরই নেত্রকোণার গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে উঠে। গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

স্থানীয়রা জানান, নেত্রকোণা সদর উপজেলার বরুনা গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে মিজানুর রহমান ঢাকার কাওরান বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করেন। স্ত্রী নাদিরা আক্তার পপি ও দুই সন্তান ফাহিম ও ইয়াসিন আরাফাতকে নিয়ে কাওরান বাজারে বাসা ভাড়া করে থাকেন। গত ১১ ডিসেম্বর স্বামীর বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন। গত রোববার নেত্রকোণা জেলা শহরের কুরপাড়ে ভাশুর আবদুল কাদিরের বাসায় মিলাদ ছিল। সন্তানদের নিয়ে ভাশুরের বাসায় যান পপি আক্তার। বেড়ানো শেষে  গত সোমবার রাতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ঢাকায় স্বামীর কাছে ফিরছিলেন পপি। কিন্তু তার আর ফেরা হল না। আদরের সন্তানসহ দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে মরতে হল তাকে। 
মঙ্গলবার সকালে এ দুর্ঘটনার খবর নেত্রকোণার বরুনা গ্রামে পৌঁছলে নিহতের পরিবার এবং এলাকায় শোকের মাতম দেখা দেয়। নিহত পপির বাবা ফজলুল হক, শাশুরী মেহের বানু, শ্বশুর আবদুল মজিদসহ আত্মীয়-স্বজনরা শোকে কাতর হয়ে পড়েন। শাশুরী শহর বানু ও বাবা ফজলুল হক কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা আহাজারি করছিলেন।

শহর বানু বার বার বলছিলেন, 'কি দোষ করেছিল আমার বৌমা ও ছোট্টা নাতী। কেন তাদের আগুনে পুড়ে মরতে হল। আমি আর আমার দাদা ভাইয়ের সোনা মুখটা দেখতে পাইতাম না। দাদা ভাই যাওনের সময় আমাকে বলে গিছিল- দাদু যাই। আবার আইবামনে। বৌমা বলেছিল- মা শরীরের খেয়াল রাইখেন। আর কোনো দিন তাদের ফিরে পাইতাম না। আগুন যারাই দিয়া থাকুক তাদের বিচার চাই।'

নাদিরা আক্তার পপির বাবা নেত্রকোণার পূর্বধলার আলমপুর গ্রামের ফজলুল হক খবর শুনে জামাইয়ের বাড়িতে যান এবং আহাজারি করছিলেন। তিনি বলেন, 'আমি কি অপরাধ করেছিলাম। কি দোষে আমার নিষ্পাপ নাতী ও মেয়েকে আগুন দিয়ে পুড়ে মরতে হল। আমি আমার মেয়ে ও নাতীকে আর ফিরে পাব না। যারা আগুন দিছে তাদের বিচার চাই।'

জানা গেছে, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে সোমবার রাত ১১টায় ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশন এসে থামলে তখন কিছু যাত্রী সেখান থেকে নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের ছিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যায়। এরপর পেছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ট্রেনের বগিতে থাকা হাবিবুর রহমান ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ছোট ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা আক্তার। তারা কোনো ভাবেই ট্রেন থেকে বের হতে পারেন নি। পরবর্তিতে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করেন। 

নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ঢাকায় ট্রেনে আগুনে কয়েকজন মারা গেছে শুনেছি। এ ব্যাপারে কেউ থানায় জানায়নি। আমাদের অবহিত করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া তাবাসসুম বলেন, নিহতদের লাশ এখনও গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেনি। নিহতদের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
  
-এসআই/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,