আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে দলীয় সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তার স্ত্রী জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি মার্জিয়া সুলতানা। আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন মার্জিয়া সুলতানা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গত ২৯ নভেম্বর বিকেলে সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন মার্জিয়া সুলতানা। এর আধঘণ্টা আগে ওই আসনে মনোনয়ন দাখিল করেন তার স্বামী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা।
৪নভেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইকালে অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হলেও ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়নপত্র দাখিল করায় মার্জিয়া সুলতানার মনোনয়ন বাতিল করে রির্টানিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান মার্জিয়া সুলতানা।
রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক আজিজুল ইসলাম।
স্বামী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি মার্জিয়া সুলতানা। ওই আসনে মোট ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় নির্বাচনের মাঠে রইলেন মার্জিয়া সুলতানা সহ সাত প্রার্থী।
এদিকে নীলফামারী জেলার ৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে থাকা ২৭ জনের প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র নারী প্রার্থী মার্জিয়া সুলতানা।
আসনটিতে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পাটির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির কারণে মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন গোলাম মোস্তফা। সে নির্বাচনে জাতীয় পাটির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল। এবারও জাতীয় পাটির ওই সংসদ সদস্যের অনুকূলে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার কারণে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা।
আসনটিতে মার্জিয়া সুলতানা সহ প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে থাকলেন ৯ জন প্রার্থী। ওই ৯ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র রয়েছেন চারজন। আওয়ামী লীগের অপর স্বতন্ত্ররা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ শামিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হুকুম আলী খান।
এদিকে জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেলের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ওই আসনের জাতীয় পাটির সাবেক সংসদ সদস্য জেলা জাতীয় পাটির উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য কাজী ফারুক কাদের। জাতীয় পার্টির মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
আসনটির অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন- মো. খলিলুর রহমান (তৃণমূল বিএনপি), মো. মোজাম্মেল হক (গণতান্ত্রিক পার্টি), বাদশা আলমগীর (বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি)।
এ বিষয়ে কথা বললে মার্জিয়া সুলতানা বলেন, ‘এ আসনে নয় প্রার্থীর মধ্যে আমি একমাত্র নারী প্রার্থী। নারী ভোটাররা অবশ্যই আমার সঙ্গে থাকবেন। এ ছাড়া আমি দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে আছি। কলেজের সাবেক শিক্ষক হিসেবে আমার অনেক শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ শুভকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। আমার বাবার বাড়ি, শ্বশুর বাড়ি নির্বাচনী এলাকায়। এ আসনে আমার স্বামী গোলাম মোস্তফা একজন সফল সংসদ সদস্য ছিলেন। দুইবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরেও দলীয় সিদ্ধান্তে প্রত্যাহার করেছেন। আমি নির্বাচনের মাঠে আছি, থাকব, জয়ের ব্যপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
এইচসি/এমবি