অর্ধেকের কম জনবল নিয়ে চলছে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ ভূমি অফিস। ভারপ্রাপ্ত আর অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েই চলছে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দাপ্তরিক কার্যক্রম। উপজেলা ভূমি অফিসের ১৬ জন জনবলের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ছয়জন। এছাড়াও ১০টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ৪০ জন কর্মচারীর বিপরীতে রয়েছে মাত্র ১৭ জন। জনবল সংকটের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে নাগরিকের ভূমিসেবা, বাড়তি দায়িত্বে সেবার মান নিশ্চিতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরত কর্মচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে এসিল্যান্ড, কানুনগো, প্রধান সহকারী, সায়রাত সহকারী, চেকিং, সার্টিফিকেট সহকারী, অফিস সহায়ক, দুইজন চেইন ম্যান, একজন জারিকারক এবং একজন জমা সহকারীর পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে কানুনগো পদটি আট বছর থেকে শূন্য রয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার দশটি ইউনিয়নের ১০ জন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিপরীতে চারজন, ১০ জন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তার বিপরীতে রয়েছে তিনজন।
এছাড়াও প্রতিটি ভূমি অফিসে একজন করে অফিস সহায়ক পদ শুন্য রয়েছে। টেপ্রীগঞ্জ ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন চিলাহাটি অফিসের, সোনাহার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকতা মুক্তার হোসেন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সোনাহার অফিসের।
তাঁরা দু-জনই দুটি করে অফিসের সহকারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন চেংঠি হাজরাডাঙ্গা অফিসের। দুটি অফিসেরই সহকারী ও উপ-সহকারী দুই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁকে। এছাড়াও দন্ডপাল, পামুলি ও দেবীডুবা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কোন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তার নেই।
শালডাঙ্গা ইউনিয়নে উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা অমর চক্রবর্তীকে দিয়েই চলছে সেখানকার সকল দাপ্তরিক কাজ। উপজেলা সার্ভেয়ার দেবাশীষ কর্মকারকে পাশ্ববর্তী বোদা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুই উপজেলায় ছোটাছুটি করতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। ইচ্ছে থাকলেও যথাসময়ে কাজগুলো শেষ করতে পারছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা গ্রহীতারা। নামজারি, মিসকেস সহ বিভিন্ন ভূমিসেবা নিতে আসা লোকজন বিপাকে পড়ছেন, সময়মতো পাচ্ছেন না কাঙ্খিত সেবা।
নামজারির কাজে আসা সমে আলী বলেন, গত ২ মাস আগে খারিজের( নামজারি) আবেদন করেছি, এখন পর্যন্ত হয়নি। আজকাল করে সময় পার করছেন ভূমি অফিসের লোকজন।
তিন মাস হলো নামজারি বাতিলের আবেদন করেছেন ভবেন্দ্র নাথ। কিছুদিন আগে শুনানি হলেও এখনো রায়ের কাগজ পাননি তিনি। চান্দিনা ভিটির লাইসেন্সে প্রাপ্ত দোকান ঘর উদ্ধারের আবেদন দিয়েছে মাসুদ পারভেজ। এক বছর হয়ে গেল, কোন সমাধান পাননি তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, ভূমি অফিসের জনবল কাঠামো অনেক পুরোনো, তখন কাজ কম ছিলো, এখন অনেক কাজ অথচ জনবল অর্ধেক। আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ সেবার মান নিশ্চিত করতে।
এইচসিআর/এমবি