হরতাল-অবরোধে ঝিনাইদহে ফুলের ব্যবসায় ধ্বস, দিশেহারা ফুল চাষীরা
Published : Sunday, 26 November, 2023 at 4:59 PM Count : 350
দিনের পর দিন দফায় দফায় চলছে হরতাল-অবরোধ। পরিবহন ব্যবসায় যেমন নেমেছে ধ্বস তেমনি ফুলনগরীখ্যাত এ জেলায় ফুল ব্যবসা মুখথুবড়ে পড়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার ফুল ব্যবসার সাথে সম্পৃক্তরা । যেখানে কয়দিন আগে গাঁদা ফুলের প্রতি ঝোপা বেঁচেছেন ১৫০ টাকায়। এখন বিক্রি করছেন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। হরতাল আর অবরোধে একদম দাম পাচ্ছেন না ফুলে। ফুল চাষ ছেড়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এমনটায় জানালেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফুলচাষী শাহাদাত হোসেন।
জানাযায়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যশোরের গদখালীর পর বেশি ফুলের চাষ হয় ঝিনাইদহে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না বাজার ও বালিয়াডাঙ্গা বাজারে প্রতিদিন বসে ফুলের হাট। দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছে এই অঞ্চলের ফুলচাষীরা।
ফুলচাষী ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগেও ফুলের দাম ভালো ছিল। কিন্তু হরতাল আর অবরোধে ফুলের বাজারে ধ্বস নেমেছে। কয়েকদিন আগে গাঁদা ফুল প্রতি ঝোপা ১৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গোলাপ প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা। জারবেরা বিক্রি হয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা আর এখন বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এ বছর ২৫৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে গাঁদা ফুল।
শরিফুল ইসলাম নামে আর এক ফুল চাষি জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে গাঁদা গোলাপ সহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করেছেন। মহামারী করোনার সময় ফুলের ব্যবসায় ধ্বস নেমেছিল। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু হরতাল অবরোধের কারণে আবার ফুলের ব্যবসায়ী ধ্বস নেমেছে।
হাফিজুর রহমান নামে এক ফুল ব্যবসায়ী জানায়, হরতাল-অবরোধের আগে ফুলের ভালো দাম পেয়েছে চাষীরা। কিন্তু এখন একদমই দাম পাচ্ছে না। পরিবহন সমস্যায় ফুল কেনা যাচ্ছে না। ফুল সঠিক সময়ে না পৌছাতে পারলে লোকসান হয়।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, এখন ফুলের মৌসুম । দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে ফুল চাষে যশোরের গদখালীর পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে ঝিনাইদহ। খুলনার ১০ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাঁদা ফুল চাষ হয় ঝিনাইদহে। হরতাল-অবরোধে ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীদের বেশ লোকসান পোহাতে হচ্ছে। চাষীরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে দিনের পর দিন । ফুল পচনশীল হওয়ায় বিক্রির অন্য কোন উপায় না থাকায় এ অবস্থা ।
এসএমআর/এমবি