মানব পাচারের গডফাদার ইয়াসিন আটক, নারী-শিশুসহ উদ্ধার ৫৮
Published : Saturday, 25 November, 2023 at 4:42 PM Count : 169
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে মানব পাচারের গডফাদার ইয়াছিন সিন্ডিকেটের প্রধান ইয়াছিনসহ ৪ জন মানব পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই সময় পাচারকারীর কবল থেকে নারী-শিশুসহ ৫৮ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেল বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতিয়ার ঘোনা বিজিবি সাইনবোর্ড সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশ মানব পাচার বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে রয়েছে ৯ জন পুরুষ ১৬ জন নারী ও ৩৩ জন শিশু।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাসেল, পিপিএম-সেবা এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ ওসমান গনি ও পুলিশ ফোর্স অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
পুলিশ জানান, ট্রলার যোগে সমুদ্র পথ দিয়ে অবৈধভাবে নারী শিশুর একটি দল মালয়েশিয়া পাচার করছে এমন খবরের ভিত্তিতে টেকনাফ মডেল থানার বিশেষ চৌকষ টিম অভিযানে নামেন।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওসমান গনি জানান, মেরিন ড্রাইভ সড়কের পূর্ব পাশে অভিযান টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের চৌকষ দল ধাওয়া করে মানব পাচারকারী চক্রের ইয়াছিন বাহিনীর প্রধান মোঃ ইয়াছিন (২৩) পিতা-আমজল হোসেন, মোঃ জুবায়ের (৩৫), পিতা-জলু সওদাগর, নাজির হোছন (৬১), পিতা-বাদশা মিয়া ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এলাকার রামিমুল ইসলাম রাদীদ (৩১), পিতা-তাজুল ইসলাম কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। অভিযানকালে পাচারকারীদের কবলে জড়ো করে রাখা ৫৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশু উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরো জানান, পাচার কারীর কবল হতে উদ্ধার হওয়া মোট ৫৭ জন মায়ানমারের নাগরিক। এরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত। এক জন হচ্ছে বাংলাদেশী।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মানব পাচারকারীর সিন্ডিকেটের সদস্যরা আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবন-যাপন, অধিক বেতনে চাকুরী ও অবিবাহিত নারীদেরকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা পূর্বক ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে যৌন নিপীড়ন, প্রতারণামূলক বিবাহ ও জবরদস্তিমূলক শ্রমসেবা আদায়ের অভিপ্রায়ে ৩/৪ দিন যাবৎ ধাপে ধাপে নারী ও শিশুদেরকে সাগরপথে পাচারের প্রস্তুতি নেয়। পরবর্তীতে মোট অংকের টাকা আদায় করে পাচারকারীরা বিভিন্ন সিন্ডিকেটে মায়ানমার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনিশিয়া নারী শিশুদেরকে পাচার করে। এমনকি সাগরের মাঝ পথে ট্রলার ডুবিয়ে দিয়ে হত্যার করারও প্রমাণ রয়েছে।
উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রাসেল জানান, মানব পাচার একটি জঘন্যতম অপরাধ। সংঘবদ্ধ জড়িত মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এফএ/এসআর