For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ভেড়া পালনে স্বাবলম্বী এতিম দুই ভাই

Published : Friday, 24 November, 2023 at 2:58 PM Count : 278


মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের এতিম দুই ভাই খোরশেদ আলম ও আজিজুল ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে একজোড়া ভেড়া কিনে শুরু করেছিল তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথচলা। 

পাঁচ বছরের মাথায় এখন তাদের খামারে রয়েছে ১১২টি ভেড়া।

ইউটিউবে ভেড়া পালন দেখে তাদের আগ্রহ জাগে ভেড়া পালনের। সামর্থ না থাকায় টাকা ধার করে ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করে একজোড়া ভেড়া। তারপর থেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের ভেড়া পালন করতে থাকে তারা।
১৫ মাসে দুবার বাচ্চা দেই ভেড়া (গাড়ল)। তারপর থেকে আর পিছে তাকাতে হয়নি তাদের। নিজের খামারে জন্ম নেয়া আর কিছু কেনার পর এখন তাদের ভেড়ার সংখ্যা শতাধিক। কয়েক বছর আগেরও যারা অন্যের বাড়িতে বা জমিতে কাজ করে সংসার চালাতো এখন তাদের খামারেই কাজ করে অন্যরা। বর্তমানে তাদের খামারে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ভেড়া আছে।

সফলতার গল্প শোনাতে গিয়ে বড় ভাই খোরশেদ আলম জানান, ছোট বেলায় বাবা মারা যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয় আমাদের দুই ভাইকে। 

সেজন্য লেখা পড়া করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্নভাবে টাকা আয়ের চেষ্টা করতে থাকতাম। পরে ছোটভাই আজিজুল ইউটিউবে ভেড়া পালন সম্পর্কে একটি ভিডিও দেখে ভেড়া পালন করার আগ্রহ জাগে। 

সে সময় মেহেরপুরে ভেড়া পালন এতো ছিল না। দুই একটা বাড়িতে পালন হতো। সদরের আমঝুপি গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা একজোড়া ভেড়া নিয়ে আমাদেরর পথ চলা। 

সেখান থেকে ৫ বছরে ছোট বড় ভেড়া আর গাড়ল মিলে ১শ ১২টিতে দাঁড়িয়েছে। বিক্রিও করা হয় নিয়মিত। উন্নত জাতের বাচ্চা একজোড়া ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পূর্ণ বয়ষ্ক গাড়ল ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। 
মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতা আসে ভেড়া কিনতে।

ছোট ভাই আজিজুল জানান, ভেড়া পালনে তেমন একটা ঝামেলা হয়না। এদের রোগ বালাই অনেক কম। ঘাস লতা পাতা খেয়ে এরা জীবন ধারণ করেন। সকালে ছেড়ে দেয়া হয় গ্রামের বিভিন্ন মাঠ ঘাট থেকে নিজেদের খাবার খাইয়ে
সন্ধ্যায় আবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। বাড়তি খাবার লাগেনা বললেই চলে। 

এদের প্রজনন ক্ষমতাও অনেক বেশি। ১৪-১৫ মাস বয়সে এরা দুবার বাচ্চা দিতে পারে। তাছাড়া বর্তমানে দেশের বাজারে ভেড়া চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসেব মতে জেলার পাঁচ শতাধিক খামারে ভেড়া ও গাড়লের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার।

মেহেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার সাইদুর রহমান জানান, স্বল্প জায়গা এবং অল্প খরচে গাড়ল ভেড়া পালন করে অনেকেই জমি ও গাড়ি বাড়ি করেছেন। 

সংসারে সচ্ছলতা এসেছে খামারিদের। ছাগল পালনের চেয়েও সহজ পদ্ধতিতে পালন করা যায় আর ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেকেই গবাদিপশু হিসেবে গাড়ল পালনের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সহায়ক হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দেশে ভেড়ার উন্নত জাত তৈরীর বিষয়ে কোন গবেষণা কিংবা প্রকল্প নেই। তাই চাষিদের এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সারা দেশে গাড়ল ভেড়ার জাত ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। পাশাপাশি জাত উন্নয়ন ও পালন
বিষয়ে আগ্রহী খামারি কিংবা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ জাত সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনীতি আরো মজবুত হবে বলে তিনি আশা করেন।

এমআর/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,