নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, 'নির্বাচনে কে এলো কে এলো না, এটা আমাদের বিষয় নয়। কেউ আসলে আসলো, না আসলে কাউকে আনার দায়িত্ব আমাদের নয়। আমরা চিঠি দিয়েছি। আমাদের নিবন্ধিত ৪৪টি দল আছে। নির্বাচনে আসা না আসা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তবে বড় দল নির্বাচনে এলে এখনো বিবেচনার সুযোগ আছে। সময় মতো নির্বাচন না করলে ফাইনালি সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে।'
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বুধবার দুপুরে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তফসিল পেছানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'তারা (বিএনপি) নির্বাচনে আসতে চাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনছি এমন কথা। যদি তারা পর্দার অন্তরালে আলাপ-আলোচনা বা জোটবদ্ধ হয় তাহলে বিষয়টি (তফসিল) পেছানোর সুযোগ আছে। আমাদের এক নির্বাচন কমিশনারও বলেছেন বড় রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে এলে তফসিল পেছানো নিয়ে সংবিধানে সুযোগ আছে।'
তিনি বলেন, 'তবে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না হলে সংবিধানে একটি শূন্যতা তৈরি হবে। তবে নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্বাচন করা। নির্বাচন না করলে ফাইনালি সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। কেউ নির্বাচনে না এলে নির্বাচন থেকে পিছু যাওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন নির্বাচনের গতিতে হবে। সময়মতো নির্বাচন হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনে কত পারসেন্ট লোক ভোট দিল, এটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আইনে ও সংবিধানেও বলা নেই, কত পারসেন্ট ভোট পড়তে হবে। সর্বোচ্চ ভোট যিনি পাবেন তিনি নির্বাচিত হবেন। নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্বাচন করা।'
আনিছুর রহমান বলেন, 'আমরা পূর্বে থেকে আহ্বান করে যাচ্ছি নির্বাচনে সবাই আসুক। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অচলাবস্থা নেই, বাধা নেই। হরতাল-অবরোধেও নির্বাচনী কাজ চলছে।'
তিনি বলেন, 'প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা এখন যারা আছেন, তারা বেশিদিন হয়নি কর্মস্থলে আছেন। নির্বাচনে কেউ অনিয়ম করলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে, এর আগে নয়।'
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলির প্রশ্নে জামালপুরের ডিসির ভাইরাল হওয়া বক্তব্য উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনে রদবদলের প্রয়োজন পড়লে করা হবে। তখন প্রশাসন আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। আমরা তবুও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওই ডিসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রশাসন এখন আমাদের। সুতরাং প্রয়োজন পড়লে আমরা প্রশাসনেও রদবদল আনতে পারি।'
জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শাখাওয়াত হোসেন ও চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
সভায় কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
-এনআই/এমএ