For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ফকিরহাটে আমন ধানের ফলনে হতাশ কৃষক

Published : Wednesday, 15 November, 2023 at 8:58 PM Count : 232

বাগেরহাটেফকিরহাটে চলতি বছর আমন মৌসুমে মাঠে কাঙ্খিত ধান উৎপাদন না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক চাষি। গত মৌসুমের তুলনায় এ মৌসুমে আমন ধানে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। এ অবস্থায় সামনের বোরো মৌসুমেও ধানের আবাদ নিয়ে সংশয়ে আছেন অনেক কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি আবাদ হলেও আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কায় আছেন চাষিরা। 

মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে এবার যেমন বেড়েছে উৎপাদন খরচ, তেমনই কাঙ্খিত ফসল না ফলায় বাড়ছে কৃষকদের দুশ্চিন্তা। বিশেষ করে নিচু জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ফসল পঁচে যাওয়া ও তুলনামূলক উচু জমিতে পানির অভাবে অনেক জমির ধানে শীষ বের হতে পারেনি। যা বের হয়েছে তাও পরিপুষ্ট নয় (চিটা) বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা।

তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দাবি, আমন ধানে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে না। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে চাষিদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার উপজেলার কয়েকটি বিলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জমির ধান গাছের গোড়া পঁচে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আবার অনেক স্থানে ধান না হওয়ায় কৃষক তা কেটে গরু, ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন। অনেক স্থানে ধান হলেও তা যথেষ্ট পরিপুষ্ট নয়। বেশির ভাগ ক্ষেতে ধানের গোছা তুলনামূলক ছোট। তবে অনেক স্থানে ধানের ভালো ফলনও লক্ষ্য করা গেছে।

কৃষকদের দাবি, এ পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো কর্মকর্তা তাদের পরামর্শ বা সহযোগিতা করেননি। ফলে ধানের বিভিন্ন রোগ ও পোকা দমনের জন্য তারা দোকানদার এবং বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের পরামর্শ নিয়েছেন। তাদের দেওয়া পরামর্শে ওষুধ, সার ব্যবহার করে শুধু খরচ বেড়েছে। মাঠের ধান রক্ষা করা যায়নি।

একাধিক কৃষক জানান, রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত ফসলের নমুনা নিয়ে স্বেচ্ছায় কৃষি অফিসে গিয়ে পরামর্শ চাওয়ার বিষয়ে কৃষকরা তেমন সচেতন নয়। 

সেক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্লক সুপারভাইজারকে (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা) শুধুমাত্র পছন্দসই কৃষকদের সহযোগিতা না করে সকল কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানান তারা।

উপজেলার বাহিরদিয়া এলাকার আহম্মদ শেখসহ একাধিক কৃষক জানান, সোলাউরো ও বালিয়ার বিলে তাদের চাষকৃত ধানের প্রায় অর্ধেক জমিতে কাঙ্খিত ফসল ফলেনি। ফলে বাধ্য হয়ে ধানের গোড়া থেকে কেটে ফেলেছেন। আবার কারেন্ট পোকার আক্রমণে পঁচে যাওয়া ধানের খড়ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।

তিনি জানান, গত বছর তার ২৫ শতক জমিতে ২৮ মণ আমন ধান হয়েছিল। এ বছর একই জমিতে মাত্র ৩০ কেজি ধান পেয়েছেন।

উপজেলার বগুড়ার বিলেও অনেক স্থানের ধান নষ্ট হয়ে গেছে। চাষি সরদার গোলাম মোস্তফা জানান, গত বছর তার ১৪ কাঠা জমিতে ৩২ হাজার টাকার ধান ও ছয় হাজার ২০০ টাকার খড় বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এ বছর ১০ কেজি ধানও হবে না।

একই বিলের এক বিধবা কিষাণী হাবিবা খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিই জমি চাষ করেন। কিন্তু এ বছর কারেন্ট পোকা ধরে তার অর্ধেক ধান পঁচে গেছে। বাকি ধানের শীষ চিটা (অপুষ্ট) হয়েছে।

নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের বড় বিলের চাষা বরকতুল্লাহ শাপলা জানান, তার তিন বিঘা জমির সব ধানই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তিনি মারাত্মক ক্ষতির মূখে পড়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এবার প্রাকৃতিক পরিস্থিতি কিছুটা বিরূপ হওয়ায় আমনে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তাকে মাঠ পর্যায়ে চাষিদের পরামর্শ প্রদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং তারা সেটা করেছে।

-এটি/এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,