একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণে আইনি কোন বাঁধা নেই বলে মনে করছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মন্তব্যে দেশবাসী স্তম্ভিত ও হতবাক বলেও দাবি করেন রিজভী।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, 'বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনের অযোগ্য।'
অ্যাটর্নি জেনারেলের এমন বক্তব্যে রিজভী বলেন, 'খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলা দেয়ার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছেন এবং তাতে তিনি স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু সেই বিষয়ে আদালত এখনো সিদ্ধান্ত দেননি। আদালত আপিল গ্রহণ করেছেন কিন্তু কোন প্রকার শুনানি হয়নি, আদালত কোন প্রকার রুল বা আদেশ দেননি। তাহলে তিনি কিভাবে বললেন, বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।'
অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, 'মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিচারিক আদালতে সাজা হলেও, আপিল চলমান অবস্থায় তারা নির্বাচন করেছেন কিভাবে?'
রিজভী বলেন, 'অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব আপনিতো আওয়ামী লীগের নেতা। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তাহলে আপনি কিভাবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা থাকেন?'
তিনি বলেন, 'সরকারি ক্ষমতার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আপনার মতো দলবাজ আগ্রাসী আইন কর্মকর্তা থাকলে ন্যায় বিচার পাওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সাবজুডিস বিষয়ে নির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট বক্তব্য রেখে তিনি সংবিধান ও আদালতের অবমাননা করেছেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে অবশ্যই পারবেন। এ বিষয়ে আইনে কোন বাঁধা নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্ত্রাসের উর্বর ক্ষেত্র বানাবে ক্ষমতাসীন দল। তার আলামতগুলো এখন ফুটে উঠতে শুরু করেছে। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে জনগণের মধ্যে ততো সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের গোপন বৈঠকের তথ্য ফাঁস হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগ ও ইসি’র পক্ষ থেকে এসব বৈঠকের কথা অস্বীকার করা হলেও তথ্যগুলো যে সঠিক এটির বাস্তব প্রমাণ পাওয়া গেছে।'
রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগ যে কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করবে এটা তাদের মনোনীত প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় ঘোষণাও দিয়েছেন। গণতন্ত্র, প্রশাসন, সুশাসন ধ্বংসকারীদের অন্যতম হোতা এইচ টি ইমাম তার গুণধর পুত্রকেও নিজের ইমেজে তৈরী করেছেন। এইচ টি ইমামের পুত্র তানভীর ইমাম ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভোটের দিন কেন্দ্র দখল রাখতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ ফরিদপুরে এক সভায় বলেছেন, নৌকার বিপক্ষে গেলে শালাদের গুলি করে মারবো। এই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।'
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গেমপ্ল্যান খুব সুস্পষ্ট, সেটি হলো বাংলাদেশে একটি পক্ষই থাকবে, সেটি হলো আওয়ামী লীগ ও তার দোসর’রা। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুর অভিমূখী হওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের সকল প্রস্তুতি প্রশ্নসাপেক্ষ।'
-আরইউ/এমএ