আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যেই জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে অনেকেই আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসবার একটা পাঁয়তারা করছে। এটা স্পস্টত যে দিল্লীর সাথে সম্পর্ক থাকায় এধরণের কথা বলা সম্ভব। দিল্লীর মদদেই হয় তো এধরণের কথাগুলো বলা হচ্ছে যে আওয়ামী লীগকে নিয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। যারাই আওয়ামীলগকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধেই দেশের জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাড়াবে।’
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারী) দুপুরে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গণসংযোগকালে একথা বলেন তিনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়ন, এম আলমগীর কবির, ইঞ্জিনিয়ার শেখ রেজওয়ান, এম আই সুমন, খন্দকার ময়নুল হক মীম, রিফাত হাসান প্রমুখ। এর আগে তিনি কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক হাজার দুঃস্থ নারী ও পুরুষের হাতে হাতে উষ্ণতার বস্ত্র বিতরণ করেন। পরে গণসংযোগ করেন তিনি।
গণসংযোগ শেষে আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ২৪ এর আন্দোলনে এসেছে। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে নতুন রুপে গড়তে চেয়েছে। সেই গড়তে চাওয়ার জায়গা থেকে বাংলাদেশের মানুষ সংস্কারগুলো চায়। মানুষ একটা নতুন সংবিধান প্রত্যাশা করে। সেই জায়গা থেকে সংবিধান তৈরির ম্যান্ডেন্ট গণ পরিষদের থাকে। একটি গণ পরিষদ নির্বাচন যাতে হয়, সেই কারণেই আমরা প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি। আমরা মনে করি, বাংলোদেশের সামনের যে নির্বাচন আসতেছে। সেটা একটা গণপরিষদ নির্বাচন হবে।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি, খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা বাংলাদেশে যে নারকীয় গণহত্যা করে গেছে তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনভাবেই আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে আমরা ফিরতে দিবো না। বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একাট্রা হয়েছে। তাদেরকে যারা নির্বাচনে আনার পাঁয়তারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ সব শক্তি নিয়োগ করবে। ’
আখতার বলেন, ‘ বাংলাদেশে যদি পতিত ফ্যাসিবাদিদের কোনরুপ কোন আস্তানা, কোন রুপ কোন আষ্ফালন সেটা ফেসবুকে বা অন্যত্র হোক তাহলে আমরা আইনশৃঙখলা বাহিনীকে বলবো তাদের বিরুদ্ধে যেন স্পষ্টত কার্যকর কঠিনতম ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
আখতার হোসেন বলেন, ‘বিএনপির অংশগ্রহণ ছিল না ১৪, ১৮ বা ২৪ এর নির্বাচনগুলোতে। তাতে করে সেই সব নির্বাচনগুলোতে একতরফা নির্বাচন বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে না থাকে তাহলে সেটাকেও একতরফা নির্বাচন বলে সাব্যস্ত করা হতে পারে। এমন ভাবনা ঠিক নয়।’
ফেব্রুয়ারীর মধ্যেই রাজনৈতিক দল আসছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে একটি রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারীর মধ্যেই সেই রাজনৈতিক দলের আমরা দেখা পাবো। এর মধ্যেই ২০০ থানা কমিটি আমরা করেছি। জানুয়ারী মাসের মধ্যে ৪ শতাধিক থানা কমিটি হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা করবো। অনেক নাম প্রস্তাবনা এসেছে। যাছাই বাছাই শেষে ফাইনাল করা হবে।’
কেমন হবে দল এ কথা উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক চর্চা থেকে এই দলের আবির্ভাব হবে। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা ইসলাম বিদ্বেষ যেমন আমরা টলারেট করবো না। একইভাবে হিন্দু, উগ্রবাদ কিংবা মুসলিম উগ্রবাদের যে জায়গাগুলো আছে সেগুলো আমরা বরদাশত করবো না। বাংলাদেশের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবসা করতে চায়, সম্প্রীতিতে বসবাস করতে চায়। সম্প্রীতির মধ্যমপন্থী এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি। সেই জায়গা থেকেই আমাদের এই রাজনৈতিক দল।
পরে তিনি কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
এলওয়াই/এসআর