পটুয়াখালীর বাউফলে অতি দরিদ্র নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভালনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিডব্লিউবি প্রকল্পের মাধ্যমে কেশবপুর ইউনিয়নের দরিদ্র নারীদের জন্য প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ রয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে একসঙ্গে ৩ মাসের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।
কেশবপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাভোগী মোসা. সীমা বলেন, তার কার্ড নম্বর- ২০। ২০২৪ সালের এপ্রিল, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মোট ৪ মাসের ১২০ কেজি চাল তিনি পাননি। চালের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি বলেন, “চাল কাক-পক্ষীতে খেয়ে ফেলেছেন।” পরে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ৩ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম চাল না দিয়ে জোরপূর্বক তার ভিডব্লিউবি কার্ডে টিপসই দিতে বাধ্য করেন।
একই ওয়ার্ডের শাহিনুর আক্তার নামের অপর এক সুবিধাভোগী বলেন, তিনি ভিডব্লিউবি কর্মসূচির তালিকাভুক্ত। তার কার্ড নম্বর- ২১। বিগত দিনে তিনি প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। ২০২৪ সালের এপ্রিল ও ডিসেম্বর মাসের বরাদ্দকৃত ৬০ কেজি চাল তিনি পাননি। চালের জন্য তিনি ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান তাকে বলেন, “চাল নেই।”
১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ওয়ার্ডে ২২ জন কার্ডধারী নারী ভিডব্লিউবি কর্মসূচির চাল পেয়ে থাকেন। মো. শাহজাহান গাজী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বরাদ্দের চাল নিয়ে নয়-ছয় করেন। কার্ডধারীদের চাল না দিয়ে তিনি চাল আত্মসাত করেন।
তিনি বলেন, শাহজাহান গাজী জেলেদের চাল, জেলেদের মাঝে গরু বিতরণ, কৃষকদের মাঝে সার, বীজ ও কিটনাশক, টিসিবি পণ্য বিতরণেও ব্যাপক অনিয়ম করেন। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। যে প্রতিবাদ করে, তার ওপর হামলা চালানো হয়। চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি আমি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহজাহান গাজী বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি কোনো অনিয়মের সাথে জড়িত নই।
বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএ/আরএন/এসআর