নেত্রকোনায় জেলা পরিবহন শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক তারিফুর রহমান রিপনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে করা মানববন্ধনে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবহন শ্রমিকবৃন্দের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করলে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক নান্টু মিয়া, মিন্টু মিয়া, ট্রাক পরিবহন শ্রমিক আজগর আলী, নির্মাণ শ্রমিক সুজন মিয়া, জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তৌফিক। তাদেরকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত শনিবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু স্বাক্ষরিত এক পত্রে অসাংগঠনিক ও সংগঠন বিরোধী কাজের অংশ হিসেবে স্থানীয় পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, দখল ও হুমকি-ধমকিসহ একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারিফুর রহমান রিপনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
শ্রমিকরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন পরিবহনের সাধারণ শ্রমিকরা জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক তারিফুর রহমান রিপনের বিরুদ্ধে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। আয়োজক শ্রমিকরা ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অপরপক্ষ হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক নান্টু মিয়া বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের পরিবহন সেক্টর চাঁদাবাজমুক্ত হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক তারিফুর রহমান রিপন স্থানীয় পরিবহন খাতের অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে চাঁদাবাজি শুরু করেন। এতে আমরা শ্রমিকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। তার এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে আমরা আজ নেত্রকোনা জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করি। মানববন্ধন শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তারিফুর রহমান রিপনের লোকজন হামলা চালিয়ে আমাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। তাদের হামলায় আমাদের লোকজন আহত হন। আমরা রিপনের চাঁদাবাজি বন্ধ চাই এবং এই ন্যাক্কারজনক হামলার বিচার চাই।
আহত নেত্রকোনা জেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তৌফিক বলেন, আমি ১৯ বছর ধরে এমন কিছু দেখিনি। যারা আজকে প্রোগ্রাম করতে আসছে, তারা বিএনপির কোনো প্রোগ্রাম করতে আসেনি। আজকে আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে তারা আক্রমণ করেছে এবং আমাকে মারধর করেছে। বিগত দিনে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সুবিধা ভোগ করেছে। আমাদেরকে স্ট্যান্ড থেকে বের করে দিয়েছিল। আমাদের দাবি, বিগত দুর্দিনে আমরা তারিফুর রহমান রিপনকে নিয়ে মাঠে ছিলাম, এবং এখনো আমরা মাঠে আছি। নতুনভাবে কেউ যেন মাঠে না আসে, সেটাই আমাদের দাবি।
নেত্রকোনা জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক তারিফুর রহমান রিপনের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
নেত্রকোনা থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ জানান, সকালে একদল শ্রমিক অন্য গ্রুপের শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করতে চাইলে, দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএফ/আরএন/ এসআর