Sunday | 19 January 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
Sunday | 19 January 2025 | Epaper
BREAKING: আমরা যে সুখে-শান্তিতে আছি, অনেকের ভালো লাগে না: আজহারী      ট্রাকচাপায় নিহত ৩      রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের ২০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর      অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্টো নেই: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য      ভ্যাট না বাড়িয়ে খরচ কমানোর দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত: বিএনপি      ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার      প্লে-অফে রংপুর      

চরাঞ্চলে লোকসানের মুখে কাঁকড়া চাষিরা

Published : Thursday, 5 December, 2024 at 2:41 PM  Count : 222

ভোলার সাগর মোহনার দ্বীপ চর ইউনিয়ন চর কুকরী মুকরী। দ্বীপটির চারিদিকে নদী আর সাগর দিয়ে বেষ্টিত। রয়েছে বেড়িবাঁধ। বেড়িবাঁধের একপাশে বসতি অন্য পাশে শাখা নদী ও সাগর। এ এলাকার বাসিন্দাদের আয়ের উৎস মৎস্য খাত। এখানকার মানুষজন অনেকেই শাখা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

ইলিশ, চিংড়ির পর কাঁকড়া এখন এ অঞ্চলের জেলেদের মূল্যবান সম্পদ। তাই চরের মানুষ বাড়ির আঙ্গিনায় ছোট ছোট ঘের করে কাঁকড়া চাষ করছেন। গত ৪-৫ বছরে অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। এই এলাকার ঘেরগুলোতে স্বল্প পুঁজিতে বাড়তি আয় হিসেবে কাঁকড়া চাষ করছেন। এখানে সব মৌসুমেই কাঁকড়া শিকার বা চাষ হলেও বর্ষার মৌসুমে এ অঞ্চলগুলোতে কাঁকড়া চাষ ও শিকার বেড়ে যায়।

উপকূলীয় এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব, স্বল্প পরিশ্রম ও বেশি মুনাফার  হওয়া অনেকেই এই সুবিধাজনক পেশাটিতে নিজেকে সামিল করেছে। এরই মধ্যে কাঁকড়া চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন অনেকেই। পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়তা পেলে কাঁকড়া রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

চর কুকরী মুকুরীর চাষি খলিলুর রহমান কয়েক বছর আগে অনাবাদি ১৫ একর জমিতে ঘের তৈরি করে কাঁকড়া চাষ শুরু করেন। শীত মৌসুমে সাগর মোহনার ডুবোচর ও ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল থেকে জেলেদের ধরে আনা কাঁকড়ার বাচ্চা তিনি খামারে ছাড়েন। খাবার হিসেবে ব্যবহার করেন কুচিলা, পঁচা চিংড়ি এবং শুটকি। মাত্র তিন মাস পরই ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনে পরিণত হয় এক একটি কাঁকড়া।

এসব কাঁকড়া আকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি করে তারা। ছোট-বড় এসব খামারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এই জনপদের অনেকের। স্বল্প বিনিয়োগে অধিক লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে কাঁকড়া চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, উপজেলার বঙ্গোপসাগর উপকূলের ঢালচর, চর পাতিলা, মানিকা ও কুকরী মুকরীতে নদী ও সামুদ্রিক কাঁকড়া বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক হাজার পরিবার। কাঁকড়া আহরণ সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই এ পেশায় ঝুঁকে পড়েছেন।

প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যান্ত শুকিয়ে যাওয়া খাল, বিল, নদী ও ম্যানগ্রোভ বাগানে শিকারিরা নেমে পড়েন কাঁকড়া শিকারে। বিশ্বের অন্যতম মৎস্য সম্পদ কাঁকড়ার প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র হলো ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এখান থেকে আহরিত কাঁকড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। কিন্তু মাঝে করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বিদেশে কাঁকড়া রপ্তানি, এর মধ্যে ২/৪টি চালান গেলেও তাহাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে পাইকারদের।

চর কুকরী এলাকার কাঁকড়া চাষি ফিরোজ মেম্বার বলেন, '২০১৩ সালে এফডিবি সংস্থার সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে পুকুরে নেটজাল দিয়ে কাঁকড়া চাষ শুরু করি। মাত্র কয়েক মাস পর কাঁকড়া বিক্রি করে পুঁজির চেয়ে কয়েকগুন টাকা আয় করি। কিন্তু এখন আগের মত দাম পাই না, যা দাম পাই তা দিয়ে সংসার চলে না।'

চর কচ্ছপিয়া এলাকার কাঁকড়া শিকারি ইসমাইল মিস্ত্রী বলেন, 'পরিবারের চার জন মিলে কাঁকড়া শিকার করি। প্রতিদিন লোহার হাড়াস নিয়ে ভাটায় শুকিয়ে যাওয়া নদী ও খালে কাঁকড়ার গর্ত অনুসন্ধান করে কাঁকড়া ধরি। কাঁকড়াগুলো আড়তে বিক্রি করি কিন্তু আগের মত দাম পাওয়া যায় না। তাই এ অঞ্চলে অনেক কাকড়া শিকারী এ পেশা ছেড়ে দিয়েছে।

চর কুকরীর কাঁকড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, আগে যেখানে এখান থেকে অর্ধ শতাধিক কাঁকড়ার ঝুড়ি বিদেশে রপ্তানী হত এখন সেখানে ৫-১০টির বেশি ঝুড়ি সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা পাঠানো যাচ্ছে না। আবার যদি কোনো কারণে এর একটি চালান ফেরত আসে তাহলে সেগুলো স্থানীয় বাজারে দাম পাওয়া যায় না। 

উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, এ সকল কাঁকড়া বিক্রি করে অনেক পরিবারই এখন সামলম্বী হয়েছেন। এ
অঞ্চলে কাঁকড়া চাষ ও শিকার লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন এনজিও এবং মৎস্য অধিদপ্তর কাঁকড়া চাষ করার জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছে। উপকূলীয় এলাকার নিচু জমি বা খালে জাল ফেলে কাঁকড়া ধরছে। কাঁকড়া চাষিরা আবার কেউ কেউ চরের খালি জমিতে মাটি তুলে পুকুর খনন করে এনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন নিয়ে কাঁকড়ার চাষাবাদ করছে।

-এমএ
Related topic   Subject:  ভোলা   চরফ্যাশন   কাঁকড়া   


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close