Sunday | 19 January 2025 | Reg No- 06
Epaper | English
   
Sunday | 19 January 2025 | Epaper
BREAKING: আমরা যে সুখে-শান্তিতে আছি, অনেকের ভালো লাগে না: আজহারী      ট্রাকচাপায় নিহত ৩      রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের ২০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর      অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্টো নেই: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য      ভ্যাট না বাড়িয়ে খরচ কমানোর দিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত: বিএনপি      ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার      প্লে-অফে রংপুর      

আলুর বীজে সিন্ডিকেট, দিশেহারা চাষি

Published : Wednesday, 4 December, 2024 at 9:14 PM  Count : 126

রাজশাহী জেলায় প্রতি বছরই আলুর বাম্পার ফলন হয়। কৃষকরা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে আলু চাষ করে লাভের আশায় অপেক্ষায় থাকেন। কিন্তু এবার আলুর উৎপাদন খরচ ও বীজ নিয়ে সিন্ডিকেট চলছে। কাঙ্ক্ষিত বীজ না হলে আলুর ফলন ভালো হয় না। তাই বীজ সংগ্রহে কৃষক মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

বর্তমানে জেলার প্রায় সব উপজেলায় আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কিন্তু ভালো বীজ সিন্ডিকেটের দখলে থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

তারা বলছেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। সিন্ডিকেট করে কারসাজির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে ৬০ টাকা কেজির বীজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছে তারা। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। শেষ পর্যন্ত বীজ পাবেন কিনা, এ নিয়েও শঙ্কায় আছেন কোনও কোনও চাষি।

উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয় রাজশাহীর তানোরে। চলতি মৌসুমে আলু চাষের জন্য বীজ আলু নিয়ে শুরু হয়েছে মহা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও নেতারা। যার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও কোন ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, ব্র্যাকের বীজ আলু পেতে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা। তারপরও মিলছে না ব্র্যাকের বীজ। শুধু আলু বীজ নয় সার নিয়েও শুরু হয়েছে লঙ্কাকাণ্ড।
জানা গেছে, জেলার তানোর, পবা, বাগমারা, চারঘাট, বাঘা ও গোদাগাড়ি উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। এসময় কৃষকরা আলু রোপণের জন্য জমি চাষ করছেন। কিন্তু ব্র্যাকের আলুর বীজ কোনভাবেই কৃষকরা পাচ্ছে না।

সম্প্রতি তানোরে তালন্দ বাজারে ব্র্যাক আলুর বীজ ডিলার শাহিনের দোকানে বীজ পেতে ভোররাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে বিকেলের দিকে এক বস্তা করে বীজ ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন চাষিরা। তবে সেটা একেবারে অপ্রতুল।

চাষিদের অভিযোগ, শাহিন ব্র্যাক বীজ নিয়ে কারসাজি করছেন। প্রান্তিক চাষিদের কাছে ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রি না করে রাতের আধারে দ্বিগুণ দামে বীজ কালোবাজারি করেছেন।

তারা বলছেন, শাহিন মাস্টার ব্র্যাকের বীজ ডিলার হয়ে প্রতিনিয়তই রাতের আধারে ট্রাকে করে বীজ পাচার করেছে। ব্র্যাকের আলু বীজের দাম ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু সে ৭/৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। গত ১০/১২ দিন ধরে সে বীজ নিয়ে বিভিন্ন তালবাহানায় আত্মগোপনে আছে। সেই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে তার মোবাইল নম্বর।

জানতে চাইলে শাহিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অসুস্থ পরে কথা বলছি। পরে দু’দিন ধরে তার মোবাইলফোনে কল করলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তালন্দ এলাকার আলু চাষি সোহেল জানান, ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করব। কিন্তু একবস্তাও বীজ মিলেনি। ওই এলাকার হাফিজুর ৭ বিঘা, ইসারুল ইসলামের ৬ বিঘা, সলিমের ৫ বিঘা ও আশরাফুল ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে চাইলেও বীজ পাননি। সেই সঙ্গে সারও মিলছে না ন্যায্য দামে।

তারা জানান, ন্যায্য মূল্যে বীজ না পেলেও প্রতিনিয়তই দ্বিগুণ দামে বীজ বিক্রি হচ্ছে। আমরা অল্প পরিমাণে নিজস্ব জমিতে আলুর চাষ করব এজন্য আমাদের মতো প্রান্তিক কৃষকদের বীজ দেয়া হচ্ছে না। কারণ, দ্বিগুণ দাম তো দিতে পারব না। শুধু বীজ না সার পাওয়ায় কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ন্যায্য দামে কোনো কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।

চাষিদের অভিযোগ, কৃষি অফিসের মাঠকর্মী বা বিএস রয়েছে। তাদের তো হিসেব থাকার কথা কোন এলাকায় কতো কৃষক আলু রোপণ করবেন। আলু রোপণের জন্য কতটুকু বীজ-সারের প্রয়োজন। কিন্তু বিএসরা মাঠে না এসে ঘরে বসেই হিসেব করে থাকে। যার কারণে প্রতি বছর আলু রোপণের আগে চলে সিন্ডিকেট। আলু রোপণের জন্য কতটুকু বীজ কৃষকদের ঘরে মজুদ আছে এবং কি পরিমান আমদানি করতে হবে। এসব নিয়ে কাজ করলে কেউ সিন্ডিকেট করতে পারবে না। সেটা না করে কৃষি অফিস থেকেই বলা হচ্ছে বাহির থেকে সার আনতে হবে, নইলে ঘাটতি পূরুণ হবে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, এবার উপজেলায় ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য ২৯ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন বীজের প্রয়োজন। তবে কি পরিমাণ বীজ মজুদ আছে এবং কি পরিমান আমদানি করতে হবে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি। ডিলার সম্পর্কেও তেমন কোন তথ্য নেই কৃষি অফিসে। অবশ্য সবকিছু দ্রুত সময়ের মধ্যে কেটে যাবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশাবাদী তিনি।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, জেলায় যে পরিমাণ বীজ আলু মজুত আছে, তাতে কোনোভাবেই সংকট তৈরি হওয়ার কথা নয়। সংকট হবে না। এরপরও সংকটের অভিযোগ আসছে। আমরা প্রতি উপজেলায় এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। অভিযোগ পেলেই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আরএইচএফ/এসআর
Related topic   Subject:  রাজশাহী  


LATEST NEWS
MOST READ
Also read
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000.
Phone: PABX- 41053001-06; Online: 41053014; Advertisement: 41053012.
E-mail: [email protected], news©dailyobserverbd.com, advertisement©dailyobserverbd.com, For Online Edition: mailobserverbd©gmail.com
🔝
close