শ্রীনগর উপজেলার পূর্ব-আটপাড়া এলাকায় ‘ক’ তালিকাভুক্ত জমিতে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার মৃত ফজল মাদবরের ছেলে মো. দেলোয়ার মাদবরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে। একই এলাকার মৃত ক্ষেত্র চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী যাদব চন্দ্র দাস ও স্ত্রী ঝর্না রানী দম্পতি এমনটাই অভিযোগ করেছেন।
তারা বলেন, এই জায়গার বিষয়ে বিজ্ঞ-অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল-১ মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা চলমান আছে (মোকদ্দমা নং- ৩১৫ (আপীল মোকদ্দমা নং-৫১/১৯)। গত ৪/৫ মাস আগেও দেলোয়ার মাদবর ও তার লোকজন বিরোধপূর্ণ জমিতে স্ক্যাভেটর মেশিন (ভেক্যু) দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করে। এ ব্যাপরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। এখন দেলোয়ার মাদবর আবার ঘর নির্মাণ করছেন। এদিন বৃদ্ধ যাদব চন্দ্র দাস (৮০) জানান, দেলোয়ার মাদবর (৫০) ও নিগার সুলতানার (৪০) বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বুধবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে গিয়েও জমিতে ঘর নির্মাণ করার সচিত্র চোখে পড়েছে। দেখা যায়, সিমেন্টের খুঁটি গাড়া হচ্ছে।
ঘরমিস্ত্রী নবীর হোসেন বলেন, দেলোয়ার মাদবর তাদের ঘর নির্মাণের জন্য ঠিক করেছেন। এ সময় এক নারীকে চেয়ারে বসে কাজের তদারকী করতে দেখা গেছে। তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন তার নাম নিপা আক্তার। সে জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। দেলোয়ার মাদবর তাকে ঘর তুলে দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটপাড়া মৌজায় খতিয়ান নং-৩৮৫, এসএ ৮৬১, আরএস ৯৯০ নং দাগে মোট নাল জমির পরিমান ০.৫০ একর, খতিয়ান নং- ০৪, এসএ ৮৬৩, আরএস ৯৯২ নং দাগে জমির পরিমান ১.৩৪ একর। প্রভাবশালী এক ব্যক্তি জমিটি একসনা লিজ আনার সুবাদে আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ের মাধ্যমে আরেক প্রভাবশালী দেলোয়ার মাদবরের কাছে হস্তান্তর করে। দেলোয়ার মাদবর সুযোগ বুঝে অবৈধভাবে ড্রেজার সংযোগের মাধ্যমে জমির উর্বর মাটি কেটে জমির এক অংশে পুকুর খনন করে। সরকারের নীতিমালা অমান্য করে অর্পিত সম্পত্তির শ্রেণি পরিবর্তণ করে দেলোয়ার মাদবর। এ নিয়ে (গত ৩০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীঃ) অসহায় হিন্দু পরিবারটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস ও শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় (জিডি নং-১৩৬২)। এতেও অভিযুক্ত দেলোয়ার মাদবরকে থামানো যায়নি। ওই জায়গায় ফের ঘর নির্মাণ শুরু করে। এনিয়ে সনাতন পরিবারটি চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার মাদবর জমি বেচাকেনার ব্যবসা করে। এলাকায় প্রভাবশীলী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায়ন না। মো. দেলোয়ার মাতবরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবী করেন, এটা তার সম্পত্তি তাই ঘর নির্মাণ করছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হাবিব জানান, জমির শ্রেণি পরিবর্তণ করা যাবেনা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এইচআইএল/এসআর