For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

তৃতীয় দিনেও শ্রমিক বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া

Published : Tuesday, 31 October, 2023 at 6:31 PM Count : 232

সাভারের আশুলিয়ায় মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাংচুর চালিয়েছে বিভিন্ন তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাদেরকে সড়ক থেকে সড়িয়ে দিতে চাইলে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

এতে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর ও ঘোষবাগ এলাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সরেজমিনে এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে এবং আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলেও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজিবি, জেলা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও আর্মড পুলিশের সদস্য মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভের সময় আতঙ্কে সড়কের দুই পাশের দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ দেখা গেছে। 
এছাড়া, শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের দুই পাশের অধিকাংশ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৮টার দিকে শ্রংরা কারখানায় উপস্থিত হয়ে তাদের হাজিরা দেয়ার পর পরই কারখানা থেকে বের হয়ে যায়। পরে তারা আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় সড়কে টায়ার ও কাঠের টুকরা জ্বালিয়ে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। তাদেরকে বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকরা বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পুলিশের ওপর থেমে থেমে হামলা করতে থাকেন। পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে সাত-আট জন আহত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে শ্রমিকদের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে মজুরি বোর্ডের সভায় আমাদের দাবি না মেনে কম মজুরির কথা বলা হচ্ছে। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবো। 

শ্রমিক ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমাদের কারখানায় কোনো ঝামেলা নেই। তবে বাইরে ঝামেলা, তাই ছুটি দিয়ে দিছে।’

এদিকে, বেলা ১১টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকায় গাছের ডালপালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে। কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিতে দেখা যায়।

এছাড়া, আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় উইলিয়ামস সোয়েটার্স লিমিটেড নামে একটি কারখানার মূল ফটকে ভাঙচুর চালায় উচ্ছৃঙ্খল একদল যুবক। তাদের সবার মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। কারখানার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ৮ থেকে ১০ উশ্ঙ্খৃল তরুণ লাঠি হাতে কারখানায় ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা নিরাপত্তারক্ষীর কক্ষসহ ভেতরের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষও ভাঙচুর করে। প্রাইভেটকারসহ অফিসের অন্যান্য জিনিসপত্র ভেঙে দেয়। তারা কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের ছুটি দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময় গেটের বাইরে আরও ১০ থেকে ১২ জন তরুণ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। আশপাশে আরও চার/পাঁচটি কারখানায় একই কায়দায় হামলা চালায় তারা।

কারখানার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক পলাশ দত্ত বলেন, ‘হঠাৎ করে বেশ কয়েক যুবক লাঠি হাতে কারখানায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা কারখানা ছুটি দিতে হুমকি দেয়। এছাড়া আশপাশে কয়েকটি কারখানায়ও হামলায় চালায় তারা। প্রাথমিক ভাবে ধারণা ধারণা করা হচ্ছে, ভাঙচুরে কারখানার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘যারা কারখানায় হামলা চালিয়েছে, তারা শ্রমিক না অন্য কেউ? এটা নিয়েও সন্দেহ আছে। তাদের পোশাক ও বয়স দেখতে সেটাই প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।’

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক সরোয়ার আলম বলেন, ‘অধিকাংশ শ্রমিক শান্ত এবং নিরীহ। তারা কাজে যোগদান করতে চায়। অনেক জায়গায় কাজ চলছে। কিছু কিছু শ্রমিক উশৃঙ্খলতা প্রদর্শন করছে। তাদেরকে বিভিন্ন মহল থেকে ইন্ধন দেয়া হচ্ছে, উস্কানো হচ্ছে, আমরা অলরেডি কিছু মহলের পরিচয় নিশ্চিত করেছি। উশৃঙ্খল যে শ্রমিক রয়েছে তাদেরকে এখান থেকে ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছি। তারা যেন এখানে সহিংসতামূলক কার্যক্রমে লিপ্ত না হতে পারে আমরা সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। এছাড়া কিছু কিছু কারখানা এরই মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আবার কিছু কিছু আংশিক চলছে।’

-ওএফ/এমএ

মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,