ফরিদপুরের মধুখালীতে ছোট ভাইকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে মানসিক ভারসাম্যহীন আপন বড় ভাই।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের দাঁড়ির পাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত ওই যুবকের নাম সাদ্দাম শেখ (৩০)। সে কৃষি কাজ করতেন। সাদ্দাম শেখ উপজেলার দাঁড়িরপাড় গ্রামের মৃত আলতাফ শেখের ৫ম সন্তান। ৬ মাস পূর্বে সে বিয়ে করেন।
জানা যায়, উপজেলার জাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা আলতাফ শেখ গত মাসের ২২ জুলাই মারা যান। আগামী শুক্রবার পারিবারিক উদ্যোগে আলতাফ শেখের মৃত্যুতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এনিয়ে পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত ছিলেন।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলতাফ শেখের চতুর্থ সন্তান আনিস শেখ (৩৫) হঠাৎ করেই তার আপন ছোট ভাই (আলতাফ শেখের ৫ম সন্তান) সাদ্দাম শেখ (৩০) কে বাঁশের মোঁথা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
পরে আহত সাদ্দামকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, আনিস শেখ মানসিক ভারসাম্যহীন। দীর্ঘদিন যাবৎ তার চিকিৎসা চলছে।
মধুখালীর স্থানীয় সংবাদকর্মী মতিয়ার রহমান বলেন, আনিস শেখ নামের ওই ছেলেটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে কিছুদিন আগে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
নিহত সাদ্দাম শেখের বড় ভাই আওয়াল শেখ জানান, আনিস দীর্ঘদিন যাবৎ মানসিক রোগী। মাঝে মধ্যেই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
বিশেষ করে শীতের সময় বেশি সমস্যা হয়। হঠাৎ করেই রোববার রাতে পাগলামি শুরু করেন, এসময় ছোট ভাই সাদ্দাম তাকে থামাতে গেলে আনিস এ ঘটনা ঘটায়।
তিনি আরও জানান, এসময় আমরা বাড়িতে কেউ ছিলাম না। খবর পেয়ে সাদ্দামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত সাদ্দাম শেখের স্ত্রী মদিনা বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে মাত্র ৬ মাস। এর মধ্যেই স্বামীকে হারাতে হলো। আমি বাবার বাড়িতে ছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি আমার স্বামী আর নেই। ওকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে আমার ভাসুর আনিস।
জাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্যা মো. ইসহাক হোসেন বলেন, আনিস দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ। মানসিক ভারসাম্যহীন ।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রাতেই আনিসকে আটক করা হয়েছে। তবে সে মানসিক ভারসাম্যহীন।
সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এসআর