মধ্যরাতে ডিবির অভিযানে মডেল মৌ ও পিয়াসা আটক
Published : Monday, 2 August, 2021 at 10:11 AM Count : 547
বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, ইয়াবা ও সিসাসহ আলোচিত মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ ও ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগ।
রোববার (১ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে প্রথমে রাজধানীর বারিধারায় মডেল পিয়াসার বাসায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
পরে পিয়াসার দেয়া তথ্যে আরেক মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ-এর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। তার বাসা থেকেও বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে মৌকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকেও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
ডিবি উত্তরের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর রশীদ জানান, পিয়াসা ও মৌ আক্তার বিভিন্ন সময় উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের আমন্ত্রণ জানিয়ে পরবর্তীতে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বরিধারা ও মোহাম্মপুরের বাসা থেকে মদকদ্রব্য পাওয়া গেছে। তাদেরকে আটক করা হয়েছে; আগামীকাল গুলশান ও মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হবে। ব্ল্যাক মেইলের বিষয়গুলোর সত্যতা যাচাই বাছাই করে আরও মামলা করা হবে
জানা গেছে, গতকাল রাতে গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি দল বারিধারার ৯ নম্বর রোডের ৩ নম্বর বাসায় অভিযান চালায়। বাসাটি বিতর্কিত মডেল পিয়াসার। ডিবি পুলিশ পিয়াসার ঘরে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় তারা তার ঘরের টেবিলের ওপর রাখা চার প্যাকেট ইয়াবা জব্দ করে। তবে ভিতরে কতগুলো ট্যাবলেট রয়েছে এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়াও পিয়াসার রান্নাঘরের ক্যাবিনেটে থরে থরে সাজানো বিদেশি মদ উদ্ধার করে। অভিযানের এক পর্যায়ে তারা পিয়াসার ফ্রিজ খুলে একটি আইসক্রিমের বাক্স থেকে সিসা তৈরির কাঁচামাল এবং বেশ কয়েকটি ই-সিগারেটের সন্ধান পায়। এ ছাড়াও তার কাছ থেকে চারটি স্মার্টফোনও জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় পিয়াসাকে একটি রুমে রাখা হয়। তার সঙ্গে ডিবির দুজন নারী অফিসার ছিলেন। অভিযান শেষে নারী সদস্যরা পিয়াসাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে ডিবি অফিসে নিয়ে যান।
ডিএমপির সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাকে আটক করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে নাম ছিল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার। প্রথমে মামলা করতে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পিয়াসার বিরুদ্ধেই আবার মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগীদের একজন। চার বছর পর আবারও আলোচনায় সেই পিয়াসা। ডিবি পুলিশের অপর অভিযানটি পরিচালনা করা হয় মোহাম্মদপুরের ২২/৯ নম্বর বাবর রোডের বাসায়। বাসাটি কথিত মডেল মরিয়ম আক্তার মৌয়ের। পুলিশ ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার করে। এ সময় মৌয়ের বাসায় মদের আসর চলছিল। পুলিশ মৌকে আটক করে গোয়েন্দা দফতরে নিয়ে যায়। অভিযান শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, এরা সংঘবদ্ধ ব্ল্যাকমেল চক্রের সদস্য। উচ্চবিত্তদের সঙ্গে সম্পর্ক করে পরে ব্ল্যাকমেল করে। নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করে। এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।