বড়পুকুরিয়ায় বিনা নোটিশে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে বের করে দেয়ার অভিযোগ
Published : Tuesday, 27 July, 2021 at 8:27 PM Count : 435
দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উৎপাদন কাজে নিয়োজিত চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এক্সএমসি/সিএমসি’র সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই খনিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অসন্তোষ চীনা কোম্পানির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় করোনাকালীন পরিবার পরিজন নিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে পাঁচ শতাধিক খনি শ্রমিক।
লক ডাউনের শুরু থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় খনির অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয় কোয়ারেন্টিন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার টিকা নেয়া ও করোনাকালীন খনির বাইরে বের না হওয়ার শর্তে বাংলাদেশি শ্রমিকদের খনিতে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে এভাবেই খনিতে কয়লা উত্তোলনের কাজ করে আসছিলেন তারা।
স্থানীয় শ্রমিকদের অভিযোগ, করোনায় তাদের খনির বাইরে বের হওয়ার বিষয়ে কঠোর বিধিনিষেধ থাকলেও চীনা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ফলে পরিবার-পরিজন ছেড়ে খনি অভ্যন্তরে মাসের পর মাস থাকতে হয়েছে তাদের। চীনা শ্রমিকদের কারণেই খনিতে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। সম্প্রতি পাঁচ চীনা শ্রমিকসহ ২৬ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হলেও স্থানীয় শ্রমিকদের বিনা বেতনে খনির অভ্যন্তরে কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। তবে এ সিদ্ধান্তে রাজি না হওয়ায় তাদের খনি থেকে বের করে দেয়া হয়। খনি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র চীন শ্রমিকদের নিয়ে কয়লা উত্তোলন করায় প্রতিনিয়তই হ্রাস পাচ্ছে খনির কয়লা উৎপাদন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, কর্মঘণ্টার ভিত্তিতে তাদের বেতন প্রদান হলেও এর আগে ৭৩ দিন বেতন প্রদান সাপেক্ষে কোয়ারেন্টিনে রেখেও তাদের বেতন দেয়া হয়নি ।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, খনির অভ্যন্তরে কোভিডের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যে কোন মূল্যে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়দের বের করে দেয়া হয়েছে।
আগামী ১১ নভেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান জানান, গত মাসের ২০ তারিখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জন করা হয়েছে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে নতুন করে চুক্তি হলে আবারও শ্রমিকদের কাজে যোগদান করানো হবে। আগামী তিন মাসের জন্য পর্যাপ্ত কয়লা মজুদ আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শ্রমিকদের বের করে দেয়া হয়েছে তথ্যটি সঠিক নয় বলেও জানিছেন এমডি ।
বড়পুকুরিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সুলতান মাহমুদ বলেন, শ্রমিকদের সাথে খনি কর্তৃপক্ষের মত বিরোধের কারণে গত কয়েকদিন যাবত খনি এলাকার শ্রমিকদেরর মাঝে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করলেও বর্তামনে তা স্বাভাবিক রয়েছে।
-এএম/এনএন