সন্দ্বীপ
Published : Friday, 18 June, 2021 at 11:04 PM Count : 501
সন্দ্বীপ বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে চট্টগ্রাম জেলার মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত দ্বীপ উপজেলা। প্রায় ৪ লাখ জনসংখ্যার এই দ্বীপ ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫-১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। অবারিত সবুজ মাঠ, নদীর বুকে জেগে উঠা চর কিংবা সহজ সরল মানুষ এক কথায় এই দ্বীপের সবকিছুই ভালো লাগার মত। এছাড়াও দ্বীপে দেখার মত ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থান রয়েছে।
সাগর-নদী পরিবেষ্টিত এই দ্বীপে ভ্রমণ সারা জীবন মনে রাখার মত। আর শীতের সময় ক্যাম্পিং করার জন্যে সন্দ্বীপের পশ্চিম দিকে (রহমতপুর) নদী পাড় হচ্ছে আদর্শ জায়গা। এখানকার চারপাশ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
কিভাবে যাবেন সন্দ্বীপ
ঢাকা থেকে কুমিরা
ফকিরাপুল থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোন বাসে করে ছোট কুমিরা আসতে ভাড়া লাগবে ৪৮০ টাকা। বাস সুপারভাইজারকে বলুন সন্দ্বীপ ফেরীঘাট যাবার রোডের মাথায় নামিয়ে দিতে। সেখান থেকে অটোরিক্সা করে ১০-২০ টাকা ভাড়ায় টমটম কিংবা রিক্সায় করে কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরীঘাট ব্রীজ পৌঁছানো যায়।
চট্টগ্রাম থেকে কুমিরা
শহরের অলংকার বা এ কে খান মোড় থেকে সেইফ-লাইন সার্ভিসে ৩০-৩৫ টাকা ভাড়ায় কুমিরা ঘাটঘর রোড যাওয়া যায়। আবার নিউ মার্কেট থেকে ৭ নাম্বার মেট্রো সার্ভিসে করে ২৭ টাকা ভাড়াতে কুমিরা ঘাটঘর রোড যাওয়া যায়। কুমিরা ঘাটঘর রোড থেকে ১০-২০ টাকা ভাড়ায় টমটম কিংবা রিক্সায় করে কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরীঘাট ব্রীজ পৌঁছানো যায়।
কুমিরা ঘাট থেকে সন্দ্বীপ
কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার জন্যে স্পিডবোট ও ছোট লঞ্চ আছে। স্পিডবোট ভাড়া জনপ্রতি ৩০০ টাকা, গুপ্তছড়া ঘাট (সন্দ্বীপ) যেতে সময় লাগবে ৩০ মিনিটের মত। যদি হোটেলে থাকতে চান তবে সন্দ্বীপ ঘাট (গুপ্তছড়া ঘাট) থেকে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন টাউন কমপ্লেক্সে। আর ক্যাম্পিং করার জন্যে যেতে পারেন সন্দ্বীপের পশ্চিম পাড়ে (রহমতপুর) নদী ঘেঁষে। সন্দ্বীপ ঘাটে নেমে সিএনজি (ভাড়া ২৫০-৩০০ টাকা) দিয়ে চলে যেতে যেতে পারবেন রহমতপুর।
সন্দ্বীপে থাকার ব্যবস্থা
সন্দ্বীপের মূল শহর এলাকা এনাম-নাহার মোড়ে কিছু হোটেল রয়েছে। যদিও মান খুব বেশি ভালো নয়। সেনেরহাট এলাকায় রয়েছে একটি উন্নত মানের হোটেল। তাছাড়া পূর্ব অনুমতি নিয়ে রাখলে উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে থাকার ব্যবস্থা আছে। আর ক্যাম্প করে থাকার জন্যে সবচেয়ে ভালো হয় সন্দ্বীপের একেবারে পশ্চিম প্রান্ত রহমতপূর চলে যাওয়া।
নোট
* সন্দ্বীপের বিখ্যাত মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন। তবে এর জন্য আপনাকে দ্বীপের দক্ষিণে শিবের হাট যেতে হবে।
* সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরতে পারেন আশেপাশে। অল্প সময়ে আরামে কোন একটা এলাকা ঘুরে দেখার জন্যে বেস্ট অপশন।
* রিক্সা বা অন্যান্য বাহনের ভাড়া একটু বেশি মনে হতে পারে, দরদাম করে নিবেন।
* খেজুরের রস এই সময় পাওয়া গেলে না খাওয়াটা বোকামি হবে। আশেপাশেই খোঁজ করলেই পাবেন। গাছ থেকে সদ্য নামানো রসের মজাই আলাদা।
* খেজুরের রসের ফিন্নি/পায়েস যদি সম্ভব হয়ে কোথাও খেয়ে দেখতে পারবেন, স্বাদ ভুলবেন না কখনো নিশ্চিত।
* যদি সম্ভব হয় স্থানীয়দের প্রিয় ঘন খেজুরের মিঠাই এর সাথে কোড়ানো নাড়িকেল আর খোলাজা পিঠা খেয়ে আসবেন।
পরামর্শ
পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন, স্থানীয়দের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণ করুন। ক্যাম্পিং করে থাকলে চারপাশে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে না ফেলে একসাথে রেখে পুড়িয়ে ফেলুন।
-এনএন