পরীমনির মামলায় গ্রেফতারের পর নাসির মাহমুদ যা বললেন
Published : Monday, 14 June, 2021 at 4:52 PM Count : 789
ঢাকাই সিনেমার অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় নাসির ইউ মাহমুদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওই ক্লাবের একজন পরিচালক। পরীমনি ও তার বন্ধুরা যখন ক্লাবে ঢোকে তখন ক্লাব থেকে প্রায় সবাই চলে গেছে। তারা খুব উশৃঙ্খল ভাবে ক্লাবে ঢুকে সোজা বারের কাউন্টারে যায়। সবাই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে তখনই দুলছিল। তারা আমাদের বারের কাউন্টার থেকে বড় বড় দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেওয়ার চেষ্টা করে। ক্লাবের সেক্রেটারি এবং সিকিউরিটি ইনচার্জ সে সময় না থাকায় তখন আমি কাছে গিয়ে তাদের বাধা দেই। বলি, ক্লাবের মেম্বার না হলে তারা ক্লাবের বাইরে মদ নিতে পারেন না। এখান থেকে মদ নিতে হলে তোমাদের কোনো সদস্যের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে নিতে হবে।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমি বাধা দেয়ার পরপরই পরীমনি উত্তেজিত হয়ে যায়। ভাঙচুর করে, গালিগালাজ করতে থাকে। আমাদের স্টাফরা তাকে থামানোর চেষ্টা করে। ওই সময় আমি থামানোর চেষ্টা করি। তার সঙ্গে যে ছেলে ছিল তিনি ওই সময় এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় দেয়। গ্লাস মারে আমার ঘাড়ে লাগে। আমাদের সিকিউরিটিরা এসে তাকে সরিয়ে নেয়। সেই সময় সে অনেক ড্রিঙ্কস করে ফেলে। আপনারা সিসি ক্যামেরায় দেখবেন সে গাড়িতে কীভাবে উঠতেছে।
তিনি বলেন, ক্লাবের কর্মকর্তা হিসেবে ক্লাবের সম্পদ ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। তাদের সেদিন বাধা দিয়েছিলাম বলেই আমাকে এখন ভিকটিম বানানো হচ্ছে।
এর আগে সকালে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ ছয় জনকে আসামি করে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন পরীমনি।
রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে বনানীর নিজ বাসায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। তার আগে পরীমনির একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে মুহূর্তেই তোলপাড় হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে পরীমনি বলেন, তিনি যদি মারা যান তবে দায়ী থাকবেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
পরীমনি সাংবাদিকদের বলেন,
আমাকে জোর করে ওয়াশরুমে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। সে নাকি বেনজীর আহমেদের
বন্ধু। কাছের মানুষ। আমাকে সে বলে, বেনজীর কি তোর বাপ লাগে? পারলে তোর
বাপকে ডাক। তোকে তিন টুকরা করে নদীতে ভাসায় দেব।
পরীমনি আরও বলেন, উনার নাম নাসির ইউ আহমেদ, বোট ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট। আমি তাকে চিনিই না। ওই দিনই আমার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরী বলেন, বুধবার রাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এ ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় গেলেও সহযোগিতা না করে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় চার দিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে সহযোগিতা চেয়ে না পেয়ে ফেসবুকের শরণাপন্ন হন।
থানায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরে আহম মিয়া জানিয়েছেন, ডিউটি অফিসারের কাছে ভোররাতে পরীমনি যখন এসেছিলেন- তখন তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। এ অবস্থায় কারও অভিযোগ নেওয়া সম্ভব নয়। তখন আমাদের টিম তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত দিয়ে আসে। তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি। কোন অভিযোগ দিতেও আসেননি।
-এমএ