For English Version
বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
হোম

'মাছের সঙ্গে আমিও ভেসে যেতে চেয়েছিলাম'

Published : Saturday, 29 May, 2021 at 11:19 AM Count : 577

'ইয়াসের পানিতে মাছ ভেসে গেছে, মাছের সঙ্গে আমিও ভেসে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে আজো বেঁচে আছি- আম্পানের পর ইয়াস আমায় পথে বসিয়ে দিয়েছে, আমি এখন শেষ।'

কথাগুলো বলছিলেন বরগুনাতালতলী উপজেলার খোট্টারচর গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা রাসেল মিয়া। 

শুধু রাসেল মিয়া নয় এমন কান্না এখন অনেক চাষির।

২০১৭ সালে বিএ পাশ করার পর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই'র কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান হৃদয়ে মাটি ও মানুষ প্রতিবেদন দেখে উপজেলার আলমগীর মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। এরপর জমিজমা বিক্রি করে ও ঋণ নিয়ে অন্যর জমি লিজ নিয়ে প্রায় চার একর জমিতে মাছের ঘের ও তার পাশে সবজির বাগান করেন এবং প্রথম বছরে ৫০ হাজার টাকা ও পরে দেড় লক্ষ টাকা লাভের মুখ দেখেন। 
কৃষি কাজে নতুন হলেও মোটামুটি সাফল্যের সম্ভাবনাই দেখছিলেন। এরপরই বাঁধ সাধে প্রকৃতি, আম্পান ও ইয়াসের ছোবল। 

কান্নাজরিত কন্ঠে রাসেল মিয়া বলেন, 'গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে আমার প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। আর এবার আরও সাড়ে চার লক্ষ টাকার মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। মাছের সঙ্গে আমিও ভেসে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে আজো বেঁচে আছি। বেড়িবাঁধের বাইরে মাছ চাষ করে আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।'

একই অবস্থা অংকুজান পাড়া গ্রামের ইসমাইল প্যাদার। তিনি বলেন, সাড়ে সাত একর জমিতে মাছের ঘের ছিল তার। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে গত বছর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছের ঘের করেছিলাম ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আমার ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে। প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

মালিপারা ছোটভাইজোড়া এলাকার মাসুম মোল্লা বলেন, অগ্রণী ব্যাংক তালতলী শাখা থেকে মাছ চাষের জন্য ৯০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মাছের চাষ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে আমার মাছের ঘেরটি তলিয়ে গেছে। এই ঘেরে আট প্রজাতির মাছ ছিল এতে প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বারোঘড় এলাকার এনায়েত শিকদারের বলেন, বিলে মাছের ঘেরে পানি উঠে সব ভেসে গেছে। এতে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পায়রা নদীতে বিপদসীমার উপরে ৬২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী সংলগ্ন এ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এতে উপজেলার তিনশ টি মাছের ঘের ও দুই হাজার আটশ পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। যার কারণে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা। ঘের থেকে মাছ ভেসে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনেক চাষি। 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের খোঁজখবর নিতে উপজেলা মৎস্য বিভাগ কাজ করছে।এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক হাজার ৮২০টি পুকুর ও ১৫০টি ঘের তলিয়ে গেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণায় এক কোটি ৬৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব আরও বাড়তে পারে।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft