'মোর কত বয়স হইলে মুই ভাতা পাইম বাহে?'
Published : Sunday, 4 April, 2021 at 3:33 PM Count : 341
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ফাতেমা বেওয়া কোন রকমে লাঠিতে ভর দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালান।
উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামের মৃত আপান আলীর স্ত্রী তিনি। তার এক ছেলে দুই মেয়ে। ছেলে-মেয়ে সবার বিয়ে হয়েছে। ছেলের আলাদা সংসার।
ছোট মেয়ে মিনু বেগমের সংসারে অশান্তি দেখা দেওয়ায় এক ছেলেসহ দুই বছর ধরে বৃদ্ধা মায়ের বাড়িতে থাকেন। ফাতেমা বেওয়ার রোজগার বলতে ভিক্ষাবৃত্তি। এতে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন। ছোট মেয়ে মিনু বেগমও মাঝে মধ্যে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করেন।
এক ছেলে থাকলেও মা ফাতেমা বেওয়া ও বোন মিনু বেগমের তেমন খোঁজ খবর রাখে না। বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে স্বামীর সংসার ফেলে আসা মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন। কোন রকম দুই শতক জমিতে ছোট একটি চালা ঘরে বসবাস করছেন। এই করুন পরিণতির মাঝেও ফাতেমা বেওয়ার পাশে কেউ এগিয়ে আসেনি। শতকষ্টের মাঝে বেঁচে থাকলেও ফাতেমা বেওয়ার কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা ও একটি সরকারি ঘর।
দুঃখের সঙ্গে ফাতেমা বেওয়া বলেন, 'মোর (আমার) জীবনটা অভিশপ্ত বাঁহে (বাবা)। সরকার গরীব মানুষকে পাঁকা ঘর দিচ্ছে, বয়স্কদের ভাতা দিচ্ছে, কিন্তু মোর বয়স ৭০ বছর হইল তাও মোর কপালে জুটলো না বয়স্ক ভাতা বাহে।'
তিনি সমাজের কাছে প্রশ্ন করেন, মোর কত বয়স হইলে মুই বয়স্ক ভাতা পাইম (পাব) বাহে?
বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খয়বর আলী বলেন, তিনি কি ভাবে বয়স্ক ভাতা থেকে বাদ পড়লেন বুঝলাম না। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতেছি। যাতে তিনি এই অর্থ বছরেই বয়স্ক ভাতা পান সেই ব্যবস্থা করছি। সম্ভব হলে ফাতেমা বেওয়ার জন্য একটি পাঁকা ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।
-এসি/এমএ