নয়নাভিরাম ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ বন বিভাগের ফাসিয়াখালি রেঞ্জের ডুলাহাজারা ব্লকের অন্তর্ভুক্ত ৯০০ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত।
১৯৯৯ সালে মূলত হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এই সাফারি পার্কটি স্থাপন করে।
আটটি ব্লকে প্রতিষ্ঠিত ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক হরিণ প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠলেও এখানে হরিণ ছাড়াও রয়েছে সিংহ, বাঘ, ভালুক, জলহস্তী, হাতি, গয়াল, কুমির প্রভৃতি প্রাণী। পর্যটকদের জন্য ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে রয়েছে একাধিক পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, বিশ্রামাগার ও ডরমেটরী।
পর্যবেক্ষণ বা ওয়াচ টাওয়ার থেকে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং পশু পাখিদের মুক্ত বিচরণ দেখা যায়।
প্রবেশ মূল্য: ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে প্রবেশ করতে ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী সৌদিয়া, এস আলম, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, মডার্ন লাইন প্রভৃতি বাসে সরাসরি ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের সামনে নামতে পারবেন। শ্রেণী ভেদে বাসগুলোর প্রতি সীটের ভাড়া জনপ্রতি ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ঢাকা থেকে ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলস্টেশান হতে সোনার বাংলা, সুবর্ন এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্রগ্রাম মেইলে যাত্রা করতে পারেন। এরপর চট্টগ্রামের নতুন ব্রিজ এলাকা অথবা ধামপাড়া বাস্ট স্ট্যান্ড থেকে এস আলম, হানিফ, ইউনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণ ও মানের বাসে ২৮০ থেকে ৫৫০ টাকা ভাড়ায় ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আসতে পারবেন।
এছাড়া কক্সবাজার এসে সিএনজি, মাইক্রো কিংবা লোকাল বাসে চড়ে অনায়াসেই ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে যেতে পারবেন। আর আকাশপথে কক্সবাজার আসতে চাইলে বাংলাদেশ বিমান, জিএমজি এয়ার লাইনস, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজের সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট রয়েছে। বিমানে কক্সবাজার আসতে ৬০০০ থেকে ৯০০০ টাকা খরচ হবে। এছাড়া আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়ক পথে উপরে উল্লেখিত উপায়ে কক্সবাজার যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
কক্সবাজার কাছে বলে পর্যটকগন কক্সবাজার থাকতেই পছন্দ করেন। কক্সবাজার না থাকতে চাইলে চকরিয়া বাস স্ট্যান্ড এলাকায় কম খরচে আবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা আছে। কক্সবাজারের বিভিন্ন দাম ও মানের প্রায় ৫০০ আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। আপনার পছন্দ মত যে কোন হোটেলে থাকতে পারবেন। সিজন ও ছুটির দিন ব্যাতিত গেলে কক্সবাজার গিয়েই হোটেল ঠিক করে নিতে পারবেন।
খাবার-দাবার
ডুলহাজারা সাফারি পার্কের ভিতরেই ক্যান্টিন আছে। প্রয়োজনে খেয়ে নিতে পারেন সেখানে। এছাড়া কক্সবাজার প্রায় সব ধরণ ও মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। মাঝারি মানের বাজেট রেস্টুরেন্টের মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি, আল বোগদাদিয়া ইত্যাদি উল্লেখ করার মত। সিজন অনুসারে অন্য অনেক কিছুর মত খাবারের দামও এখানে কম/বেশী হতে পারে। এছাড়াও লাবনী পয়েন্ট সংলগ্ন হান্ডি রেস্তারা থেকে ২০০-২৫০ টাকায় হায়দ্রাবাদী বিরাণী চেখে দেখতে পারেন। আর যারা একটু খাবার বিলাসী তাদের জন্য কেওএফসি তো আছেই।
-এনএন