আলোচনায় রাজি ইরান |
![]() পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হলো ইরান। অ্যাটোমিক ওয়াচডগের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হতে পারে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার যে বিতর্ক চলছে, তাতে সামান্য আশার আলো দেখা গিয়েছে বলে মনে করছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের নিউক্লিয়ার ওয়াচডগ সংগঠন জানিয়েছে, চুক্তির বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে তেহরান। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা কোনো রকম আলোচনাতেই যেতে চাইছিল না।’ বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটোমিক এনার্জি এজেন্সির(আইএইএ) ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রসি ভিয়েনায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইরান তাদের সঙ্গে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। ইরানের একাধিক অঞ্চলে ইউরেনিয়ামের মজুত আছে বলে আইএইএ’র বহুদিনের অভিযোগ। গত কয়েকমাসে তা আরো বাড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। কিন্তু ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন আইএইএ-র কোনো কর্মকর্তাকে ইরানে ঢুকতে দেওয়া হবে না এবং ওই অঞ্চলগুলিতে যেতে দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার গ্রসি জানিয়েছেন, ইরান এ বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ইরান শুধু পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাতে পারবে না৷ তবে আন্তর্জাতিক নজরদারির মধ্যে শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি চালু রাখার অধিকার সে দেশের রয়েছে৷ অর্থাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসার মতো ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তি কাজে লাগানো যেতে পারে৷ শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের অ্যাটোমিক ওয়াচডগের সঙ্গেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ইরান। ইরানের সিদ্ধান্তের পিছনে জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের হাত আছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই সপ্তাহেই জাতিসংঘে ইরানের বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব জমা দেওয়ার কথা ছিল এই তিনটি দেশের। কিন্তু আপাতত তা স্থগিত করা হয়েছে। তারপরেই সুর সামান্য হলেও নরম করলো ইরান। ইরানের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা আলোচনার বিষয়ে আশাবাদী। গত কিছুদিনে আলোচনার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিল ইরান। তারা জানিয়ে দিয়েছিল, আমেরিকা তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা না তুললে পরমাণু চুক্তি নিয়ে তারা কোনোরকম আলোচনায় বসবে না। দেশে ইউরেনিয়ামের মজুত অনেকগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আইনসভায়। পাশাপাশি দেশের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে অ্যাটোমিক ওয়াচডগের নজরদারি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিন্দাপ্রস্তাব গ্রহণ করার কথা ছিল জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের। জার্মানির বক্তব্য, ইরান যেভাবে এগোচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত আলোচনায় বসা দরকার। তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিতে হবে। ইরানের মূল সমস্যা অবশ্য আমেরিকার সঙ্গে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। ওই প্রস্তাবে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। ইরানও তাতে রাজি হয়েছিল। ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে শুধু বেরিয়ে আসেননি, ইরানের উপর নতুন করে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তার পর থেকেই একের পর এক হুমকি দিয়েছে ইরান। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে হুমকি আরো বাড়িয়েছে ইরান। ফলে পরমাণু চুক্তি নিয়ে নতুন করে এক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যদিও বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি পরমাণু চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনায় আগ্রহী। সূত্র: ডয়েচে ভেলে। -এনএন |