জয়পুরহাটে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
Published : Wednesday, 3 March, 2021 at 4:50 PM Count : 515
জয়পুরহাটে হঠাৎ করেই মৌসুমী ডায়রিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৬১ জন রোগী ডায়রিয়া নিয়ে জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে গত এক মাসে ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৯শ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু।
জেলা আধুনিক হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ও সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানে গেছে, গত জানুয়ারী থেকে হঠাৎ করেই জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারি মাসে রোগির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে ডায়রিয়া রোগিদের সামাল দিতে নার্স ও চিকিৎসকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন ৬১ জন রোগি। এদের মধ্যে ২৭ জনই শিশু। ওই সব শিশুদের অধিকাংশের বয়স দেড় মাস থেকে দেড়, দু বছরের মধ্যে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি করোনা রোগিদের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ রাখায় বেড স্বল্পতা রয়েছে রয়েছে বলে জানান, জেলা আধুনিক হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সরদার রাশেদ মোবারক।
এমনিতেও দেড়শো বেডের হাসপাতালে সাড়ে তিনশ রোগী থাকে। এতে বেড স্বল্পতা আরও বেড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
নতুন নির্মিত হাসপাতাল ভবনে পার হওয়ার পরে বেড সমস্যা থাকবেনা বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। ডায়রিয়া হলে সদর উপজেলার তুলাট গ্রামের ১০ মাসের শিশু পুত্র রমজানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শিশু রমজানের মা রহিমা বেগম জানান, গত সোমবার হঠাৎ করে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হলে বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করি। বেড না পাওয়ায় মেঝেতে বিছানায় ও কোলে করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জয়পুরহাট পৌর এলাকার চিত্রা পাড়া মহল্লার মা বৃষ্টি মন্ডল তার ১ বছরের শিশু পুত্র অয়ন মন্ডলকে রোববার ভর্তি করে চিকিৎসা করাচ্ছেন। বমি ও পাতলা পায়খানা করে বাচ্চা একেবারে দুর্বল হয়ে পড়েছে। নানীর কোলে ১০ মাস বয়সের শিশু পুত্র রাফি।
তার নানী ফেন্সি বলেন, গত শনিবার হঠাৎ করে বমি আর পানির মতো পাতলা পায়খানা রাফির।
সিনিয়র নার্স খালেদা আখতার ও নাছিমা সুলতানা জানান, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিতে আসছে। এদের মধ্যে শিশু বেশি। রোগীর ভিড়, তার মধ্যে ছোট একটি রুমে কষ্ট করে বসতে হচ্ছে। সেখানে নেই কোন ওয়াস রুম। খুব কষ্ট করে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে জেলা আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসা নেওয়া ডায়রিয়া রোগি বাদেই জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুলোতে প্রায় ৫শ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) মিজানুর রহমান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। পাতলা পায়না ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়াও খোলা জায়গাতে বিক্রি হওয়া খাবার ও বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পায়খানা করার পর সাবান দিয়ে ভাল ভাবে হাত পরিস্কার করারও পরামর্শ দেন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: মিজানুর রহমান।
এসআইএস/এসআর