অক্সিজেনসহ করোনার ১০টি জরুরি পরীক্ষার মূল্য তালিকা নির্ধারণ |
![]() শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা এ তথ্য জানান। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন করানোর পর এখন এ তালিকা সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের অনতিবিলম্বে কার্যকর করে তা দৃশ্যমান স্থানে টাঙানোর জন্য বলা হয়েছে। অক্সিজেনের নির্ধারিত মূল্য: একক অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেমে ঘণ্টায় ২-৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১০০ টাকা, ৬-৯ লিটারের জন্য ১২৫ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ১৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (জেনারেটর বেইজড) ঘণ্টায় ২-৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা, ৬-৯ লিটারের জন্য ৩০০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটারের জন্য ৩৫০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে (লিক্যুইড অক্সিজেন ট্যাংক বেইজড) ঘণ্টায় ২-৫ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের জন্য ১২০ টাকা, ৬-৯ লিটার ব্যবহারের জন্য ২৫০ টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ লিটার ব্যবহারের জন্য ৩০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমে হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলা দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন ব্যবহারের মূল্য ৫০০ টাকা নির্ধারণ করার হয়েছে। জরুরি ১০টি পরীক্ষার মূল্য: সিবিসি পরীক্ষার স্থিরকৃত সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা। এছাড়া সর্বনিম্ন ৪০০ ও সর্বোচ্চ মূল্য ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সিআরপি পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৬০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা। এলএফটি পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করেছে এক হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৯৫০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। এস. ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য ৪০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এস ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৮৫০ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকা। ডি. ডিমার পরীক্ষার স্থিরমূল্য এক হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। এস. ফেরিটিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। এস. প্রোকালসিটোনিন পরীক্ষার স্থিরমূল্য দুই হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। সিটি স্ক্যানের (চেস্ট) স্থিরমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ৫ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা। চেস্ট এক্স-রে (অ্যানালগ) স্থিরমূল্য ৪০০ টাকা, চেস্ট এক্স-রে (ডিজিটাল) ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ দুটি এক্স-রে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩০০ থেকে ৫০০ এবং ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিঞা আরও বলেন, অধিদপ্তর দাম নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে উচ্চ আদালতেও দেওয়া হয়েছিল। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। তাই নির্ধারিত এ মূল্য তালিকা কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে এবং দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতেও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি। উচ্চ আদালতের আদেশ পালনের বিষয়ে এখন একটি প্রতিবেদনও দাখিল করবো। হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম ২০১৮ জুলাই মাসে একটি রিট দায়ের করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৪ জুলাই হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের শেষের দিকে হাইকোর্ট বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণের অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দেন। এর মধ্যে অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ ও কোভিড-১৯ সম্পর্কিত কিছু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণে সভা করে সরকার। বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পরে সেটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আর এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন গত বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্টে দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট আদেশ পাওয়ার পর এ মূল্য তালিকা কোভিড হাসপাতালের উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শনের জন্য ৭ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। -এমএ |