For English Version
বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
হোম

উৎস দক্ষিণ আফ্রিকায়

যুক্তরাজ্য-সিঙ্গাপুরে নতুন ধরনের করোনা শনাক্ত

Published : Thursday, 24 December, 2020 at 11:44 AM Count : 4889

যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুরে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকায়।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা ভাইরাসে দু'জন আক্রান্ত হয়েছেন।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন ও উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডে আক্রান্ত ওই দুই ব্যক্তি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে এসেছেন, এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এ ঘটনার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। 

এছাড়া গত ১৪ দিনে যারা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণ করেছেন, কিংবা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদেরকে দ্রুত কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের তথ্য নিশ্চিত করেছে সিঙ্গাপুর। অন্যদিকে করোনা পজিটিভ ১১ জন সন্দেহভাজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা নতুন জাতের এই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।

ইউরোপ থেকে আসা সকল যাত্রীকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। সেই সঙ্গে আছে আইসোলেশনের ব্যবস্থাও। ইউরোপ ফেরতদের তাৎক্ষণিক সংস্পর্শে কেউ এসে থাকলে তাদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন জাতের বি১১৭ করোনা ভাইরাসের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার কোন খবর নেই। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুরে আসা ৩১ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত এ ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। তারা গত ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করে।

এরই মধ্যে ভাইরাসটি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়াইলি ম্যাখিজে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আগে যেসব তরুণ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন, তারাও এখন ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এইডস মহামারির শুরুর দিকে যে অবস্থা পার করেছি, সেই একই অবস্থা আবার পার করতে পারবো না।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের এই বৈশিষ্ট্য বা ভ্যারিয়ান্টটি দ্রুত ছড়ায় এবং দেশটির অনেক এলাকায় এর সংক্রমণও বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। তবে এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এটি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

করোনা ভাইরাসের নতুন এই ধরণটির সঙ্গে এর আগে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া নতুন বৈশিষ্ট্যের আরেকটি ভাইরাসের কিছুটা মিল রয়েছে। যদিও এ ভাইরাস দুটি আলাদা ভাবে বিবর্তিত হয়েছে। দুটি ভাইরাসেরই একটি নির্দিষ্ট অংশে এন ফাইভ জিরো ওয়ান ওয়াই (N501Y) নামে একটি পরিবর্তন হয়েছে। ওই অংশটি দিয়ে ভাইরাসগুলো মানবদেহের কোষকে আক্রান্ত করে।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেন, ‘আমার মনে হয় এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বেশি যে ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ থাকা উচিত সেটি হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসটি। এই ভাইরাসটি বিস্ফোরকের মতো সংক্রমণের বিস্ময়কর রিপোর্ট রয়েছে। আর এর সংক্রমণের সংখ্যাও অধিক হারে বাড়তে পারে।’

ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণটি খুবই উদ্বেগজনক। যাদের কোয়ারেন্টােইনে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাদের অন্য যেকোন ব্যক্তির সঙ্গে সংস্পর্শ সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা উচিৎ।

ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা করেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনার পদক্ষেপ হিসেবে লাখ লাখ মানুষকে ক্রিসমাসের (বড় দিন) পরের দিন বা বক্সিং ডে থেকেই চতুর্থ পর্যায় বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের বিধি-নিষেধের আওতায় আনা হবে।

ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডা. সুসান হপকিন্স বলেন, মনে হচ্ছে দুটি ভাইরাসই তারা অত্যন্ত সংক্রমণশীল। তারা এখনো দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে আসা ভাইরাসটির ধরণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। ভ্রমণে বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে করোনার নতুন ধরণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ সম্ভব।

ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক লরেন্স ইয়াং বলেন, সংক্রমণ ছড়ানো ঠেকাতে যে বিধি-নিষেধ (হাত, মুখ, অন্যান্য স্থান বিষয়ক) রয়েছে, তা করোনার নতুন ধরণ ছড়িয়ে পড়াও রোধ করবে। তাই দেশজুড়ে বিধি-নিষেধ আরও কঠোর করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপের প্রিমিয়ার অ্যালান উইন্ডি বলেন, প্রদেশের হাসপাতালগুলো এরই মধ্যে মুশকিলে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় প্রদেশটিতে বর্তমানে বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছে।

এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় মোট ৯৫ লাখ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে এ ভাইরাসে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।

এর আগে যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন (রূপান্তরিত রূপ) শনাক্তের জেরে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে দেশটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এই আতঙ্কের মধ্যেই সীমান্ত খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। ফলে দুই দেশের মধ্যে আবারও শুরু হচ্ছে রেল, আকাশ ও সমুদ্রপথে চলাচল।

-এমএ

বিশ্বে একদিনে করোনায় আরও ১৪ হাজার মৃত্যু
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ৩৪ দেশের বিমান চলাচল স্থগিত
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় ১২৭ বাংলাদেশির মৃত্যু

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft