জাতির শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে স্মৃতিসৌধ
Published : Sunday, 13 December, 2020 at 5:21 PM Count : 525
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ধোয়া-মোছা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার করা চলছে। পরিপাটি রূপ দিয়ে নতুন ঘাস আর ফুলে ফুলে সাজানো হচ্ছে গোটা স্মৃতিসৌধে পরিবেশ। জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত বিজয়কে ৪৯তম বারের মতো বরণ করবে সমগ্র জাতি। এজন্য ধুয়ে মুছে রং তুলির আচরে প্রস্তুত করা হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
এবছর ২৬ মার্চে বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ কেউই। এ বছর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে না আসলে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধা জানাবেন বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা।
করোনার প্রভাব একটু কমে আসায় সাধারণ মানুষের জন্য সীমিত আকারে খোলা থাকবে বীর শহিদদের রক্তে গাথা এই স্মৃতিস্তম্ভ। ভিআইপিরা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চলে যাওয়ার পর পরই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০০ জনের গ্রুপ করে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য নিবেদনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে সাধারণ জনগণ।
তবে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রোববার ১৩ ডিসেম্বর থেকে স্মৃতিসৌধে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সকালে নবীনগরে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে গিয়ে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সেখানে গিয়ে আরো দেখা গেছে, স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটক ও দ্বিতীয় ফটকের সামনে সড়কের ডিভাইডারের রং করা হচ্ছে। ফটকগুলোর ভেতরে জীবাণু নাশক স্প্রে ব্যবহার করতে বড় ধরেণের একটি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়েছে বিভিন্ন রংয়ের আলোক বাতি, গাছের নতুন টপ। আর পাইপের পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পুরোটাই। জাতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবে বলেই পুরোপুরি প্রস্তুত হচ্ছে যাচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
কামাল হোসেনসহ আরো তিন-চারজন ধোয়া মোছার কাজ করছেন। কথা হয় তাদের সাথে। তারা জানান, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে পুরো স্মৃতিসৌধ। সেই সাথে চলছে আলোক সজ্জার কাজ। আগামী দুই দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে বলেও জানান তারা।
দীর্ঘ ১৫টি বছর ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রং দেওয়ার কাজ করছেন আব্দুল জলিল। তিনি জানান, প্রতি বছর ১৬ই ডিসেম্বর ও ২৬ শে মার্চ আমরা রংয়ের কাজ করে থাকি। এবারো তাই করছি। এখানে কাজ করতে আমাদের ভালই লাগে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা কাজ করে থাকি।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন-উর-রশিদ জানান, জাতীয় স্মৃতিসৗধে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য আশপাশের সকল বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করছি। আগামী দুই-এক দিনের ভেতর তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হবে। নিরপত্তার জন্য এবার স্মৃতিসৌধ এলাকায় ৩২টি পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
বাংলাদেশ গণপূর্ত বিভাগের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন জানান, অনেক আগে থেকেই মহান বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাতে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। জণসাধারণে প্রবেশ ১৫ তারিখ পর্যন্ত পুরোপুরি নিষেধ। এছাড়া করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করা হচ্ছে।
এআই/এইচএস