অন্যের গবেষণার বিষয় নিজের নামে চালানোর চেষ্টা কুবি শিক্ষকের
Published : Thursday, 3 December, 2020 at 6:19 PM Count : 507
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্যের গবেষণা প্রস্তাবের বিষয় নিজের নামে চালানো চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি গবেষণা সেলের গোচরে আসলে তিনি গবেষণার আবেদন উঠিয়ে নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদনও করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলছেন, যার গবেষণা প্রস্তাবের বিষয় মিলেছে তিনি অভিযোগ না করায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
অভিযুক্ত শিক্ষক ড. জি এম আজমল আলী কাওসার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি আবেদন জমা দেন। আবেদনে তিনি নিজেই অন্যের গবেষণা প্রস্তাবের সাথে মিল থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মোঃ জাহিদ হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগাম-২০২০ এর ফান্ডের জন্য একটি গবেষণা প্রস্তাব জমা দেন। কিন্তু একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজমল আলী কাওসার জাহিদ হাসানের জমা দেওয়া গবেষণা প্রস্তাবটির মতো হুবহু গবেষণা বিষয়ে গবেষণার অনুমতি চেয়ে একই প্রোগ্রামে জমা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন।
এ প্রসঙ্গে প্রভাষক জাহিদ হাসান বলেন, গবেষণা করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতির জন্য আবেদন করতে হয়। স্যার আমার কাছ থেকে আবেদনটি নিয়েছিলেন। আমি যতদূর জানি গবেষণা প্রস্তাবের বিষয় হুবহু ছিল সেই আবেদনে। তবে পুরো প্রস্তাব নকল হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, কেউ যদি আমার কাছে থেকে অনুমতির আবেদন নিয়ে নকল করে জমা দেয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷
এদিকে ড. জি এম আজমল আলী কাওসার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি চাইতে হয় এই ব্যাপারটি আমার জানা ছিলো না। তাই আমি জাহিদের কাছ থেকে তার অনুমতির আবেদনটি নিয়েছিলাম। সেখানে যে তার গবেষণা প্রস্তাবের বিষয় উল্লেখ ছিল সেটি আমি খেয়াল করিনি।
কিন্তু বিষয়টি ধরা পড়লে তিনি গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর গবেষণা প্রস্তাবটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের ঘটনায় জন্য তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এক্ষেত্রে তা করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ঐ শিক্ষক গবেষণার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে তার এক সহকর্মীর সাথে গবেষণা প্রস্তাবের বিষয় মিলে যাওয়ায় তা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন।
ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যার বিষয় কপি হয়েছে সেই শিক্ষক কোনো অভিযোগ দেননি। আর অন্য শিক্ষকও তার আবেদন প্রত্যাহারের জন্য দরখাস্ত করেছেন। তিনি তো আর গবেষণা করে ফেলেননি বা করছেন এমন নয়।
উল্লেখ্য, এর আগে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ইভেনিং এমবিএ প্রোগ্রামের দুইজন ছাত্রী ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। তদন্তে ওই অভিযোগ প্রমাণিত হলে আজমল আলীকে আজীবনের জন্য ইভেনিং এমবিএ প্রোগ্রাম থেকে বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি তার সার্ভিস ফাইলে একটি ভৎর্সনামূলক চিঠি অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এসবি/এসআর