উত্তাল পদ্মা, তবুও লাইফ জ্যাকেটে অনীহা
Published : Monday, 26 October, 2020 at 5:23 PM Count : 419
রাজশাহীতে পদ্মা নদী এখন ভরা যৌবনা। চারদিকে শুধু অথৈ পানির খেলা। সেই পানির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন ভ্রমণপিয়াসুরা। বিকেল হলেই তারা নৌকায় পাড়ি দিচ্ছেন উত্তাল পদ্মায়। কিন্তু এখনও তারা পরছেন না লাইফ জ্যাকেট। ফলে নৌভ্রমণে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। পদ্মায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে ঘটছে নৌকাডুবির ঘটনা। ঘটছে প্রাণহানি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী তোলা এবং লাইফ জ্যাকেট না পরার কারণেই এ সমস্ত দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। বারবার নৌকাডুবির ঘটনা ঘটলেও টনক নড়ছে না মাঝি কিংবা যাত্রীদের। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই মাঝিরা উত্তাল পদ্মায় পাড়ি জমাচ্ছেন।
অথচ লাইফ জ্যাকেট না পরে নৌকা ভ্রমণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের এই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। নির্দেশনা মানতে মাঝিদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে অনীহা। এতে নৌকাভ্রমণ দিন দিন হয়ে উঠেছে আরও অনিরাপদ এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
রাজশাহীতে গত আটমাসে পর পর দুটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। গত ৬ মার্চ বিয়েবাড়ির ৪২ জন যাত্রী নিয়ে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় দুটি নৌকা ডুবে যায়। এতে কনেসহ ৯ জন মারা যায়। এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। জেলা প্রশাসন ও নৌপুলিশ নতুন করে নির্দেশনা জারি করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি নৌকায় লাইফ জ্যাকেট রাখা বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়।
কিন্তু এরপরেও কাউকেই নিয়ম মানতে দেখা যায়নি। ফলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর আবারও ঘটে নৌকাডুবির ঘটনা। মহানগরীর উপকণ্ঠ নবগঙ্গা এলাকায় ১৩ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে ১১ জন যাত্রী বেঁচে গেলেও মারা যান দুই শিক্ষার্থী। সপ্তাহখানেক পর তাদের মরদেহ ভেসে ওঠে।
লাইফ জ্যাকেট না থাকা এবং অতিরিক্ত যাত্রী তোলার কারণে ওই নৌকাডুবির ঘটনায় নৌকার দুই মাঝির বিরুদ্ধে মামলা হয়। কিন্তু এখনও অন্য মাঝিরা সচেতন হচ্ছেন না। পদ্মার লালনশাহ মুক্ত মঞ্চের কাছে নৌকা নিয়ে বসে ছিলেন মাঝি খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, আমার নৌকায় শুধু নয়, অনেক নৌকাতেই লাইফ জ্যাকেট নেই। কোন যাত্রীই পরতে চায় না। তাই লাইফ জ্যাকেট রাখিনি। নৌকায় বসে ছিলেন নিশা খান। তিনি বলেন, লাইফ জ্যাকেট কেউ পরছে না। তাই আমারও পরতে ইচ্ছে করছে না। তবে নৌভ্রমণে লাইফ জ্যাকেট পরা উচিত।
রাজশাহী নৌ-পুলিশের পরিদর্শক মেহেদী মাসুদ বলেন, আমাদের জনবল কম। তারপরও যতটা সম্ভব আমরা নজরদারি করি। প্রত্যেক মাঝিকেই বলা আছে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকা চালানো যাবে না। এখন অনেকে কথা শোনে। যারা কথা শোনে না তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরএইচএফ/এসআর