রায়পুরায় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলা
Published : Friday, 23 October, 2020 at 7:54 PM Count : 491
নরসিংদীর রায়পুরায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক স্কুল ছাত্রী (১৮)কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি’র উপর। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসাদুল হক চৌধুরী শাকিলসহ (২৭) তার এক সহযোগির বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় মামলা দ্বায়ের করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাত ১১টায় উপজেলার শ্রীরামপুর রেলগেইট এলাকায় অবস্থিত রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু অডিটোরিয়াম হলের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের নবিয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা ও নরসিংদী টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শাকিল রায়পুরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে। তিনি রায়পুরা পৌর এলাকার শ্রীরামপুর উত্তরপাড়ার গ্রামের বাসিন্দা। গত ছয় মাস পূর্বে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে শাকিলের পরিচয় হয়। তারপর দুজনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে ওই স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের কথা বলে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু অডিটোরিয়ামে ডেকে আনা হয়। তারপর কাজী ডেকে বিয়ে করার কথা বলে রাত না হওয়া পর্যন্ত ভবনের কেয়ারটেকার সুমনের রুমে তাকে বসিয়ে রাখা হয়। এরপর রাতে স্পিড ক্যানে সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন শাকিল। পরে ওই তরুনী বাঁচার জন্য চিৎকার দিলে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে অডিটরিয়ামের একটি রুমে আটক করে রাখা হয়। এসময় স্কুল ছাত্রীর চিৎকার চেচামেচিতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সাথে সাথে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন শাকিল। পরে সেখানকার লোকজন “৯৯৯” এর মাধ্যমে বিষয়টি পুলিশকে জানালে, পুলিশ এসে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসেন। এব্যাপারে রায়পুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আসাদুল হক চৌধুরী শাকিলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হয় কিন্তু তার ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মহসিনুল কাদির সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ নেতা সহ দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভিকটিমকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
অপর দিকে শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এ মামলার আরেক আসামী অডিটরিয়াম ভবনের কেয়ারটেকার সুমনকে খুঁজতে পুরো অডিটরিয়াম তল্লাশি করা হয় কিন্তু কেয়ারটেকার সুমনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি ।
এব্যাপারে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, উক্ত ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে । এটি একটি সরকারি অডিটরিয়াম। অডিটরিয়ামে ধর্ষনের আলামত জব্দ করার জন্য এবং এখানে কোন আসামী লুকিয়ে আছে কী না তা দেখার জন্য এখানে অভিযান চালানো হয়েছে কিন্তু সেখানে কোন আসামীকে পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন, এঘটনায় আমরা আইনগত ভাবে যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সেগুলো চলমান রয়েছে।
টিকেএস/এইচএস