For English Version
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
হোম

পূর্বধলা সরকারি কলেজে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় সহ নানা অভিযোগ

Published : Saturday, 3 October, 2020 at 1:32 PM Count : 809

নেত্রকোনার পূর্বধলা সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, প্রমাণপত্র নিয়ে ভর্তির হয়রানী, ভর্তি ফরম বিক্রি, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন না দেয়া, আপত্তিজনক অডিট গভর্নিং বডিতে না ওঠা, অনিয়মের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন ইত্যাদি নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

আন্ত শিক্ষা বোর্ডের জারি করা ভর্তির প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে, সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকায় ১ হাজার টাকার বেশি হবে না। কিন্তু শিক্ষা বোর্ডের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে অতিরিক্ত ভর্তি ফি গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে ওই কলেজের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। 

আর একটি আন্ত শিক্ষা বোর্ডের জারি করা ভর্তির প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ আছে কোভিট-১৯ জন্য ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা প্রমাণ পত্র ছাড়া ভর্তি করা যাবে সেখানেও নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে সকল দলিল পত্র সহ নিয়ে হয়রানি করেছেন ভর্তিকৃত সকল শিক্ষার্থীকে। 

ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, উপজেলা সদরের পূর্বধলা সরকারি কলেজে চলতি বছর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনলাইন প্রসেসিং ফি, ভর্তি ফি, ভর্তিকরণের নামে একাদশ শ্রেণির ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী প্রতি মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও বিএম শাখায় ১ হাজার ৫শ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ভর্তি ফরম বাবদ আরও ২শ’ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে।  গরীব, অসহায়, মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির ক্ষেত্রেও কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষের ধার্য টাকার স্থলে কম দিলে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেনি।
পূর্বধলা সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী নাজমা খানম, মেহেদী হাসান, নাহিদ শেখ বলেন, আমাদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ রসিদ মূলে ১ হাজার ৫শ’ টাকা ও ফরম বাবদ আরও ২শ’ টাকা নিয়েছে। আমরা যতদূর জেনেছি অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের এ বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে উল্লেখ নেই। সুতরাং এগুলি বিধি বহির্ভূত। 
কলেজ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ২১ সেপ্টেম্বর ভর্তির শেষ দিন পর্যন্ত সকল শাখায় সর্বমোট ১০৫৩ জন ভর্তি হয়েছে। প্রত্যেকের নিকট থেকে ফরম বাবদ ২০০ টাকা করে মোট ২ লাখ ১০ হাজার ৬০০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। যা কলেজের কোন খাতে জমা হয়নি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: আনোয়ারুল হক সহ ভর্তি কমিটির ৩ সদস্যসহ অর্থ বন্টন করে সুবিধা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিগত বছর একাদশ ও দ্ধাদশ শ্রেণিতে ভর্তি, ফরম পুরনে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কারনে মানববন্ধন সহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। তবে কোন অজানা কারনে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
    
এই বিষয়ে ভর্তি কমিটির আহবায়ক মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, ভর্তি সংক্রান্ত ব্যাপারে অতিরিক্ত কোন টাকা নেয়া হচ্ছে না। তবে ফরম বাবদ যে টাকা নেয়া হয়েছে তা বরাবরই ভর্তি কমিটি বন্ঠন নিয়ে থাকে।

যেহেতু কলেজটির জিও জারি করা হয়েছে সেখানে কলেজ উন্নয়ন খাত ছাড়া কোনো কমিটি বা ব্যক্তি বোর্ড কতৃক অর্থ ছাড়া টাকা বন্ঠন করে নেয়া সরকারি বিধি বহির্ভূত। 

এ বছর নির্ধারিত ফি ভর্তি ও সেশন চার্জ ১০০০, টিউশন ফি ১৫০, উন্নয়ন ফি ২০০, অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারি ১০০, মসজিদ ৫০ টাকা ধার্য করে উত্তোলন করেছেন। অথচ খরচ বাবদ বোর্ড থেকে আসে ৫০%। শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত সকল টাকা কলেজ উন্নয়ন খাতে না দিয়ে শুধু কমিটি বন্টন করে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, এই কলেজের অধ্যাপক সামছুউদ্দনি আহমদ, অধ্যাপক মাহফিজ উদ্দিন, অধ্যাপক মীর মতিউর রহমান ২০১৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তাদের কলেজে এখন পর্যন্ত ৪৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। যেগুলি নানা অজুহাতে বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মো: আনোয়ারুল হক প্রদান করছেন না। 
এছাড়া তিনি নিজে ১৯৯৫ সালে প্রভাষক, ২০১০ উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার পর প্রভাষক পদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। যা ২০১৮ তে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ ও হস্তান্তর ছারাই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পরবর্তীতে ২০১৮ তে তিনি তার বন্ধ হয়ে যাওয়া সমুদয় বকেয়া উত্তোলন করে নেন। অথচ ব্যাংকে টাকা নেই বলে নানা অজুহাতে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দের বেতন প্রদান করেন না। তাছাড়া ২০১৫ সালের ৪৩০ নং স্মারকে তরুণ কুমার রায়কে আহবায়ক করে অভ্যন্তরীণ অডিট করা হয়। যেখানে ৪১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯৬৫ টাকার আপত্তিজনক ব্যয় ছিল যা অজ্ঞাত কারণে সেই রিপোর্টটি গভর্নিং বডির মিটিং এখন পর্যন্ত উপস্থাপন করা হয়নি।
 
এ প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতন বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্বান্ত মোতাবেক ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া বোর্ডের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তির টাকা নেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত কোনো টাকা আদায় করা হচ্ছে না।

এসময় কলেজের বিষয়ে আরও জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

কলেজের কো-সিগনেটর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উম্মে কুলসুম বলেন, এ বিষয় খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft