ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত বাবরি মসজিদে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এলকে আদভানিসহ ৩২ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত।
দীর্ঘ প্রায় ৩ দশক পর বুধবার আলোচিত সেই মামলার রায় ঘোষণা করেন লখ্নৌয়ের বিশেষ আদালত।
রায় পড়েছেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। রায় ঘোষণার পরই অবসর নেওয়ার কথা রয়েছে এই বিচারকের।
রায়ে বিচারক বলেন, 'বাবরি মসজিদ ধ্বংস পূর্বপরিকল্পিত ছিল না।'
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বিজেপির অভিযুক্ত শীর্ষ নেতারা। তবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে যুক্ত হন বিজেপি নেতা আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী, উমা ভারতী ও কল্যাণ সেন।
ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) তৎকালীন নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানীর নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে দফায় দফায় রথযাত্রা হয়। এই রথযাত্রা থেকে ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম এই মুসলিম স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। কট্টরপন্থী করসেবকরা মসজিড় গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পরপর দেশটিতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। এতে প্রাণ যায় প্রায় ৩ হাজার মানুষের।
উত্তরপ্রদেশের এই মসজিদ ধ্বংস বদলে দেয় ভারতের রাজনীতি। মসজিদ ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও শীর্ষ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানী, মুরালি মনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী উমা ভারতী ও কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসের মতো ১৭ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন। বাকি ৩২ জনের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন আইনজীবী কেকে মিশ্র। জীবিত আছেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলিমনোহর জোশী, উমা ভারতীরা। ৮৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩৪ জন মৃত। অনেকে নিখোঁজ।
বুধবার ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে লখনৌয়ের বিশেষ আদালত বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে শহরের সব দোকানপাট, রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়। গণমাধ্যম কর্মীদেরও আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
-এমএ