For English Version
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
হোম

কলাপাড়ায় ৩ কিলোমিটার রাস্তায় ৯টি সাঁকো!

Published : Tuesday, 29 September, 2020 at 7:33 PM Count : 532

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন গ্রামের মানুষ জোয়ার ভাটার সঙ্গে লড়াই করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। দৈনন্দিন যাতায়াতের ৩ কিলোমিটার রাস্তায় রয়েছে ৯টি বাঁশের সাঁকো। খেটে খাওয়া মানুষগুলো দুর্ভোগ লাঘবে তাকিয়ে আছেন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টির আশায়।
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, লালুয়া ইউনিয়নের বানাতী বাজার থেকে ৫ নং ওয়ার্ডের চারিপাড়া, নয়াকাটা ও চৌধুরীপাড়া গ্রামে যাওয়ার ৩ কিলোমিটার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় বহু গর্ত রয়েছে। ৩ কিলোমিটারের পথ অতিক্রম করতে পার হতে হয় ৯টি বাঁশের সাঁকো। ওই এলাকার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

নদীর জোয়ারের পানি এসব ঘরে প্রবেশ করে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত ডুবে যায়। ঘরের চৌকির উপরে সারতে হয় রান্না-খাওয়াসহ দৈনন্দিন কাজকর্ম। নির্ঘুম রাত পার করতে হয় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায়। বিশেষ করে আমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে তাদের জীবনযাপন হয়ে ওঠে আরও মানবেতর। নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নিতে হয় খোলা আকাশের নিচে বেরি বাঁধের উপরে।

রাস্তা-ঘাটগুলো এতটাই শোচনীয় যে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে পথ চলাও কষ্টসাধ্য।  ইটের রাস্তার বিভিন্ন স্থান থেকে ইট সরে গিয়ে ছোট-বড় বহু গর্ত দেখা দিয়েছে। স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, রোগীদের স্বজনদের পড়তে হয় বিপাকে। দেশের চলমান উন্নয়নের কাছে পিছিয়ে পড়া লালুয়ার এই জনপদটি যেন ভিন্ন এক টুকরো বাংলাদেশ।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চারিপাড়া, নয়াকাটা ও চৌধুরীপাড়া গ্রামে মোট ৮ শত পরিবারের বসবাস। এরমধ্যে স্বচ্ছল প্রায় দুইশ পরিবার যোগাযোগব্যবস্থার দুর্গতির কারণে অন্যান্য ইউনিয়নে চলে গেছে। প্রায় দুইশত নিম্নআয়ের দরিদ্র পরিবার বেড়িবাঁধের দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষক ও জেলে। সরকারি তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না বলে তারা অভিযোগ করেন।  সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আম্পানে এসব এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এখন পর্যন্ত সরকারের তেমন কোনো সহায়তা পায়নি বলে জানিয়েছেন বেড়িবাঁধ সংলগ্ন অসহায় মানুষ।
 
চারিপাড়া গ্রামের বেড়িবাঁধের উপর বসবাসকারী আবুল হাওলাদারের স্ত্রী জেসমিন বেগম, শামসুল হক ফকিরের ছেলে সেলিম ফকির, মৃত মফিজ ফকিরের ছেলে আকবর ফকির ও মৃত ওয়াজেদ আলী হাওলাদারের ছেলে মহিউদ্দিন হাওলাদারসহ অনেকেই জানান, আমাদের ঘরবাড়ি নদীর ভাঙ্গনে ভেঙে যাওয়ায় বেড়িবাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছি। ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। আর্থিক দৈন্য দশার কারণে অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাই নিরুপায় হয়ে এখানে থাকতে হয়। সরকারের কাছে আমরা দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে সুদৃষ্টি কামনা করছি। 
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. রবিউল হাওলাদার বলেন, লালুয়া ইউনিয়নের মধ্যে আমার ওয়ার্ডটির অবস্থা খুবই শোচনীয়। একটি রাস্তায় ৯টি বাঁশের সাঁকো যা দেশের অন্য কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। তার মধ্যে দু-একটি বাদে বাকি সাঁকোগুলোর অবস্থা পারাপারের অনুপযোগী। অতি দ্রুত এগুলোর মেরামত করা প্রয়োজন।

লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়নের সবগুলো ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ নং ওয়ার্ডটি খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ সংলগ্ন হওয়ায় এ ওয়ার্ডটি প্রায় বারো মাসই পানির নিচে তলিয়ে থাকে। তাই জোয়ার-ভাটার মধ্যেই এলাকার মানুষ বসবাস করে। কোনো প্রকার সহায়তা এলে তার বেশির ভাগই এসব এলাকায় দেয়ার চেষ্টা করি। খুব শীঘ্রই রাস্তার সাঁকোগুলো মেরামত করা হবে। তবে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।

এইচএস

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft