'যে মাটিতে শেখ সাহেব ঘুমিয়ে আছেন, সেই মাটিতে আমি জুতো পায়ে হাটতে পারিনা'
Published : Tuesday, 25 August, 2020 at 1:51 PM Count : 449
ইছাহাক আলী শরিফ (৮০)। খুব সাধারণ একজন মানুষ। জীপনযাপনও তার অত্যন্ত সাদামাটা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যর হাতে নিহত হওয়ার পর থেকেই তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু মানতে পারেননি দিনমজুর ইছাহাক আলী। শেখ মুজিবকে হারানো শোক বুকে ধারণ করে দীর্ঘ ৪৫ বছর তিনি খালি পায়ে কালো পোশাকে চলাচল করেন। স্থানীয়রা তাকে মুজিব ‘পাগল’ বলে।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট বগী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে একটি জীর্ণ ঘরে বাস এই মুজিব ভক্ত ইছাহাক আলীর।
স্থানীয়রা বলেন, যখন থেকে ইছাহাক আলী শরিফকে দেখছি, তখন থেকেই দেখতাম কালো লুঙ্গি ও জামা গায়ে খালি পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন এ পাড়া থেকে ওপাড়া। আর কখনো শেখ সাহেবকে নিয়ে কেউ উল্টো কথা বললে প্রতিবাদ করেছেন। এ জন্য তিনি একবার হামলার শিকারও হয়েছিলেন। পুরো জীবন শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ বলে কাটিয়ে দেওয়া পাগল এই ইছাহাক আলী। ২০০১ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় তখন এই বঙ্গবন্ধু ‘পাগল’ মানুষটি পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতো। কতো লোকের কাছে যে তাকে মার খেতে দেখেছি, শুধু ‘জয় বাংলা’ বলার জন্য। নানা রকম অত্যাচার, নিপীড়ণ তাকে ‘জয় বাংলা’ বলা থেকে দমাতে পারেনি।
সারাজীবন, মুজিব, হাসিনা, নৌকা করে যাওয়া লোকটা কারো কাছে কিছু চাননা। তার চাওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটু দোয়া
তিনি বলেন, এখন সবাই আওয়ামী লীগ করে। আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে আর আমি মুজিবকে ভালোবাসি। একজন মুজিব ছিল বলেই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র। ৭৫ সালে শেখ সাহেবের পরিবারের অনেক লোক শাহাদাত বরণ করেন। আজ তারা সকলেই এই বাংলার মাটির নিচে চির নিদ্রায় ঘুমিয়ে আছেন। যে মাটিতে নেতা শেখ সাহেব ঘুমিয়ে আছেন, সেই মাটিতে আমি জুতো পায়ে কখনো হাঁটতে পারবো না। তাই শেখ সাহেবর মৃত্যুর পর আর জুতো পায়ে দেইনি। শরীরে থাকে কালো পোশাক।
শেখ সাহেবকে আমরা রাজনৈতিক দল দিয়ে ভাগ করি। শেখ সাহেব কোনো দলের জন্য এ দেশকে মুক্তির ডাক দেননি। তিনি বাংলার জনগণের জন্য মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। তাই শেখ সাহেবকে রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে রাখা উচিৎ।
-এমএ