জাতীয় সংসদের তিন আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিলের তারিখ ঘোষণা হলেও নিরবে রয়েছে বিএনপি। আসন্ন উপ-নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে কি না এবিষয়ে এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে দলটির হাইকমান্ড। তবে এসব দলের প্রার্থিতা পেতে স্থানীয় নেতারা ছুঁটছেন শীর্ষ নেতাদের দ্বারে দ্বারে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচিত এমপিদের মৃত্যুতে পাঁচটি আসন শূণ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। রোববার তিনটি আসনের উপনির্বাচনের জন্য তফসিলের তারিখ ঘোষণা করেছে কমিশন। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা-৪, ১৭ অক্টোবর ঢাকা-৫ এবং নওগাঁ-৬ আসনে ভোট উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া করোনার কারণে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন আরও ৯০দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচন আগেই ৯০ দিন পিছিয়ে দিয়েছে কমিশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিকুল নির্বাচনী ব্যবস্থার কারণে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ কম বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের। আওয়ামী লীগ সরকারের অধিনে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচনী পরিবেশ পায়নি বিএনপি। এজন্য আসন্ন উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়েও তেমন তোরজোর নেই। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের আগ্রহ ও সাংগঠনিক ভিতের বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে নির্বাচনের অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন দলের হাইকমান্ড।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া মানেই পরাজয় নিশ্চিত। এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই সুবিধা করতে পারেনি বিএনপি এবং আগামীতেও পারবে না। জয়ের কোন সম্ভাবনা না থাকায় নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই দলের হাইকমান্ডের।
উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে কি না এ বিষয়ে জানতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি অবজারভার অনলাইনকে বলেন, উপ-নির্বাচনের বিএনপি অংশ নেবে কি না এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই। এসব তদারকি করছেন আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনিই ভালো বলতে পারবেন বিএনপি অংশ নেবে কি না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি অবজারভার অনলাইনকে বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই-তিন দিন পর আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠক হবে। বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে সে অনুসারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যদি বৈঠকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় তবে মনোনয়ন দেয়া হবে। এবিষয়ে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
এদিকে ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৮, পাবনা-৪, নওগাঁ-৬ এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচন অংশ নেয়ার নিয়ে বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী ও স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ব্যাপাক উৎসাহ শুরু হয়েছে।
ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ সভাপতি নবীউল্লাহ নবী, দলের কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহম্মেদ।
উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ সভাপতি নবীউল্লাহ নবী বলেন, নির্বাচনের যাওয়ার বিষয়ে আমাদের দল সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তাই দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমার সিদ্ধান্ত। তবে নির্বাচনে অংশ্রগহণের সকল ধরণের প্রস্তুত আমাদের রয়েছে।
ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন পেতে প্রাচরণা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা মো. বাহাউদ্দিন সাদী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ।
এবিষয়ে এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, উত্তরায় আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা। ৩২ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। শতাধিক মামলার আসামি হয়েছি। দলের জন্য আগামীদিনেও সমানভাবে কাজ করে যেতে চাই। ঢাকা-১৮ আসনে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিজয় উপহার দিতে আমি সক্ষম হব।
এইচএস