মুক্তিযোদ্ধার জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ
Published : Monday, 24 August, 2020 at 2:17 PM Count : 232
নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতীহাট বাজারে গণেশপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বনিজ উদ্দিন মন্ডলের দুই শতক জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ কাজ করেছেন বলে শ্রীরামপুর গ্রামের বনিজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মোতাহার হোসেন জানান।
বিধি মোতাবেক দাবিকৃত মোট ৫১ শতাংশের মধ্যে ৬ শতাংশ জমি বুঝিয়ে চেয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানকে বিবাদী করে নওগাঁ জেলা প্রসাশক, পুলিশ সুপার ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল তার তিন ছেলেকে ৯০২৫ নং দলিল মূলে রেজিষ্ট্রেশন করে দেন। উক্ত দলিল মূলে জমি প্রাপ্ত হয়ে সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের গেট থেকে শ্রীরামপুর (২) সপ্রাবি'র মাঠের সীমানা পর্যন্ত দুইতলা বিশিষ্ট একটি মার্কেট নির্মাণ করে মোট ১৮টি কক্ষ বিশিষ্ট দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে এবং তারা নিজেরা ব্যবসা করছেন। তিন ছেলে নিজ নামে নামজারি পূর্বক জমিটির ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে খারিজ খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। পরবর্তীতে তারা জানতে পারেন যে তাদের ৬ শতাংশ জমির মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ জমিতে তাদের মার্কেট স্থাপনা রয়েছে। আর দুই শতাংশ জমি সতীহাট কেটি হাইস্কুল বা বিবাদী পেশি শক্তির দ্বারা অবৈধ ভাবে জবর দখল করছেন।
বাদি মোতাহার হোসেন বলেন, ১৯৬৯ সালে স্থানীয় জনৈক বাবু ফকিরের নিকট থেকে তার মরহুম বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা বনিজ উদ্দিন মন্ডল সোয়া ৮ শতক জমি ক্রয়সূত্রে রেজিষ্ট্রেশন করেন এবং এর মধ্যে থেকে সোয়া দুই শতক জমি স্কুলে দান করেন।
তার অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ সোয়া দুই শতকের স্থলে সোয়া ৪ শতক জমি দখল করে রাখায় আমরা ৬ শতকের মধ্যে মাত্র ৪ শতক জমি দখল পেয়েছি। বাঁকি দুই শতক জমি স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধ ভাবে দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে। তিনি তাদের দাবিকৃত দুই শতাংশ জমি বিবাদীর কাছ থেকে ফেরত চান।
সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, জমির সাবেক মালিক বাবু ফকিরেরা ৩ ভাই ও দুই বোন। এই তফসিলে তাদের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ শতক। এর মধ্যে বাবু ফকিরের জমির পরিমাণ সোয়া ৬ শতক যেটা তিনি প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মন্ডলকে দিয়েছেন। প্রয়াত বনিজ উদ্দিন মন্ডল ৪ শতক রেখে সোয়া দুই শতক স্কুল বরাবর দান করার ফলে তার প্রকৃত জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ শতক। এখন কেউ যদি ৪ শতক জমির মালিক হয়েও ৬ শতক কাউকে রেজিষ্ট্রি করে দেয় তার দায়ভার কে নেবে?
সতীহাট কেটি হাইস্কুল ও কলেজের সভাপতি এবং স্থানীয় গণেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ'লীগ সভাপতি হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন, মোতাহার হোসেনের অভিযোগের প্রক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক আমি উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। উভয়পক্ষের বাকবিতন্ডায় আলোচনা স্থগিত করতে হয়েছে। বাদি যেহেতু পুলিশ সুপার বরাবরও আবেদন করেছেন এ জন্য পুলিশ প্রসাশনও এবিষয়ে আলোচনায় বসবেন। তখন পুলিশের সহায়তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে একটা আপোষ মিমাংসা করা সম্ভব হবে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হালিম মিয়া বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় ও আমার নিকট একটি অভিযোগের কারণে স্থানীয় ভাবে আলোচনায় বসে সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
-এমএ