For English Version
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
হোম

শেষ মুহূর্তে রাজশাহীর বাজারে আমের দামে আগুন

Published : Thursday, 13 August, 2020 at 9:20 PM Count : 783

গ্রীষ্মের পর বিদায় নিচ্ছে বর্ষাও। একই সঙ্গে শেষ হচ্ছে আমের মৌসুমও। সপ্তাহ খানেক পরথেকে এক এক করে রাজশাহীর বাজার থেকে বিদায় নেবে সুস্বাদু সব জাতের আম। এরইমধ্যে স্বাদের আমে লেগেছে দামের আগুন। ঈদের আগেও যে আম প্রতিমণ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন সেই আম বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার টাকায়!

শেষ মুহূর্তে আসমান-জমিন তফাৎ রয়েছে আমের দামে। তাই বলা চলে এখন সাধারণ ক্রেতার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে রাজশাহীর আম। এখন যারা আত্মীয়-স্বজনকে পাঠানোর জন্য যারা আমের আড়তে যাচ্ছেন, দাম শুনে তাদের চোখ কপালে উঠছে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষার শেষে আমের সরবরাহ ফুরিয়ে আসছে। বাজারে আমের সরবরাহ কম। তাই দামও বেশি। আর সপ্তাহ খানেক পর বাজারে এক এক করে বিদায় নেবে সব জাতের আম। এজন্য বাড়তি দাম নেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই।

আসছে ১৫ আগস্টের পর থেকে বাজারে কেবল থাকবে আশ্বিনা জাতের আম। তবে স্বাদে টক ও আঁশ বেশি থাকায় সাধারণত এই আম সেভাবে খেতে চায় না মানুষ। সারা বছরের জন্য আচার, মোরব্বা ও জুস তৈরির কাজে বেশি ব্যবহার হয় আশ্বিনা আম। তাই শেষ মুহূর্তে হু হু করে বাড়ছে রাজশাহীর সুস্বাদু সব আমের দাম।
কোনো বাজারেই দামের তারতম্য নেই। মহানগরের শিরোইল বাসস্ট্যান্ড, শিরোই কাঁচাবাজার, শালবাগান, নওদাপাড়া, সাহেব বাজার, স্বর্ণকারপট্টি, লক্ষীপুর বাজার ও কোর্টচত্বর- অবস্থানভেদে সব জায়গায় একই দাম। যারা কম দামের আশায় এ-বাজার ও-বাজার ঢুঁ মারছেন দিন শেষে তাদের রিকশা ভাড়াটাই বাড়তি খরচ হিসেবে যোগ হচ্ছে আম পাঠানোর খাতায়। শেষ শ্রাবণে রাজশাহীর বাজারে এখন কেবল চার জাতের আম মিলছে। এর মধ্যে রয়েছে- মিষ্টি ও রসালো আম ফজলি (মহারাজ), বারি-৪, আম্রপালি ও আশ্বিনা জাতের আম। তবে দাম বেজায় চড়া। শেষ সময়ে আমের পাইকারি ও খুচরা দামের ব্যবধানও কমে এসেছে।

মহানগরের সাহেব বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী জসি এন্টারপ্রাইজের তৌফিক ইমাম কোয়েল বলেন, আর মাত্র এক সপ্তাহ, বেশি হলে দুই সপ্তাহ পাওয়া যাবে এসব আম। তার পর থেকে কেবল থাকবে আশ্বিনা জাতের আম। আর কিছু পরিমাণ ফজলি পাওয়া যাবে। তবে ওই ফজলি (মহারাজ) আমগুলো পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আনা হবে।

কারণ রাজশাহীর অনেক পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগান থেকে আম নামানো হয়। তাই রাজশাহীর আম শেষ হয়ে গেলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাওয়া যায়। ওই জেলার আম দেরিতে ওঠে এবং দেরিতে শেষ হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম আড়তদার সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, রাজশাহীর বাজারের চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দাম কিছুটা কম। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ ও কানসাটসহ এলাকার হাটে ফজলি আম ১০ হাজার টাকা মণ, বারি-৪ আম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং আশ্বিনা জাতের আম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এখনো ফজলি আম গাছে আছে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে এই আমের দাম আরও বাড়বে।

এদিকে মহানগরের শালবাগান এলাকার খন্দকার ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মনিরুজ্জামান মিনার বলেন, আম শেষ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আড়তগুলোতে সরবারহও কমে যাচ্ছে। তাই আমের দামও বাড়ছে। আর এখন পাইকারি ও খুচরা বাজারে আমের দামের কোনো হেরফের হচ্ছে না। আড়তের আম যেই দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারেও সেই দামেই আম বিক্রি হচ্ছে। পার্থক্য হচ্ছে, আড়তে গেলে কাঁচা আম বেশি পাওয়া যাচ্ছে আর খুচরা বাজারে মিলছে পাকা আম। কাঁচা আম ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে সুবিধা হয়। এই আমগুলো পরিবহনে পচে না। আর পাকা আম পাঠাতে গেলে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়িতেই পচে যায়।

আম ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মিনার আরো বলেন, শালবাগান বাজারে ফজলি আম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা মণ, বারি-৪ জাতের আম ১০ হাজার টাকা মণ, আম্রপালি আম ৯ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা মণ এবং আশ্বিনা জাতের আম ৪ হাজার ৪শ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আমের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। আজ যে দাম কাল তার চেয়ে ১শ থেকে ২শ টাকা বেশি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক জানান, জেলায় ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। আর এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। এছাড়া অপরিপক্ব আম নামানো ঠেকাতে এবারও সময় বেঁধে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী গত ১৫ মে থেকে গুটি আম, ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা এবং ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি, ১৫ জুন থেকে বিভিন্ন জাতের ফজলি আম নামানোর সময় শুরু হয়।

সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামার কথা ছিল আশ্বিনা ও বারী আম-৪ জাতের আম। তবে আবহাওয়াজনিত কারণে এবার বেঁধে দেওয়া সময়েরও অনেক পরে রাজশাহীর প্রতিটি বাগান থেকে আম নেমেছে। যে কারণে প্রতিবছর জুলাইয়ের শেষে আম ফুরিয়ে গেলেও এবার আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীর বাজারে আম মিলবে বলেও উল্লেখ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

আরএইচএফ/এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,   [ABOUT US]     [CONTACT US]   [AD RATE]   Developed & Maintenance by i2soft