পটুয়াখালীর বাউফলে ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ১৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন অনুমোদন নেই। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ ভাবে চলছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেবা, নিউ হেলথ, কালাইয়া, কালিশুরী স্লোব বাংলাদেশ, নিউ লাইফ ও মাজেদা নামের ৬টি হাসপাতাল ও পৌর শহরের কথামনি, ইসেব, পলি, জাবির, কালাইয়া বন্দরে নুহা, কালিশুরী বন্দরে মেডিকেয়ার ও ফেয়ার মেডিকেল সার্ভিসেস এ্যান্ড ল্যাব, বগা বন্দরে আপন ও বগা ডায়াগনস্টিক, কাছিপাড়া বাজারে ল্যাব এশিয়া ও কাছিপাড়া ডায়াগনোস্টিক, কনকদিয়া প্যাথলজি, নওমালা নগরের হাট বাজারে গ্রামীণ কল্যাণ ও নগরের হাট ডায়াগনস্টিক, নুরাইনপুর নিউ লাইফ কেয়ার, আদাবাড়িয়া নিউ কাশিপুর, তাসিম ও গ্রামীণ কল্যাণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকলেও এর একটিরও অনুমোদন নেই।
হাসপাতালের মধ্যে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিক, নিউ হেলথ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিক এবং মাজেদা ডায়াগনোস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের অনুমোদন পেতে অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। কালাইয়া ও স্লোব বাংলাদেশ হাসপাতালের লাইসেন্স থাকলেও হালনাগাদ নবায়ন নেই।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে একমাত্র পলি এক্সরে ও প্যাথলজি অনলাইনে আবেদন করলেও বাকি ১৭টি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের কোন অনুমোদন নেই। এগুলো অবৈধ ভাবে চালানো হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিধি অনুযায়ি বেসরকারি হাসপাতালের জন্য একজন সার্জন, ৩ জন
এমবিবিএস ও ১ জন অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক, বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল অনুমোদিত ৬ জন ডিপ্লোমা নার্স, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট, পোস্ট অপারেটিভ রুম, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পয়জন লাইসেন্স থাকার কথা থাকলেও ৬টি হাসপাতালের কোনটিতে তা নেই।
সার্জন ছাড়াই সিজার করানো হচ্ছে প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে। অ্যানেসথেসিয়ার জন্য চিকিৎসক আনা হয় ওয়ান কলে। এছাড়াও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে একজন ল্যাব টেকনেশিয়ান, একজন এক্সরে টেকনেশিয়ান, একজন প্যাথলোজিস্ট, একজন রিপোর্ট প্রদানকারী চিকিৎসক ও একজন রেডিওগ্রাফার থাকার কথা থাকলেও তা কোথাও নেই। এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে চলছে চরম নৈরাজ্য। কোন জবাবদিহিতা নেই।
তবে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা দাবি করেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের সরকারি অনুমোদন বা হালনাগাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা বাউফলের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর তালিকা তৈরি করেছি। অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অবহিত করেছেন। অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
-এএস/এমএ