সোনারগাঁওয়ে পানিবন্দী হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে দু’গ্রামের ৩’শ পরিবার
Published : Saturday, 11 July, 2020 at 8:38 PM Count : 535
সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দুটি গ্রামের রাস্তা ও বাড়ির আঙিনা। উপজেলার পৌরসভায় সাহাপুর ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়াপাড়া গ্রামে এ চিত্র এখন দেখা যায়। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ দু' গ্রামে সামান্য বৃষ্টিতেই হাটু পানি জমে থাকে। এ জলাবদ্ধতার ফলে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। এলাকাবাসী অবিলম্বে এর নিরসন চায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের সাতভাইয়াপাড়া ও সোনারগাঁও পৌরসভার সাহাপুর এলাকায় এ বর্ষা ও বৃষ্টির মওসুমে সামান্য বৃষ্টিতে পানি সরতে পারে না। তলিয়ে যায় রাস্তাসহ বাড়ির আঙিনা। বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি জমে ময়লা ও আবর্জনায় পরিনত হয়েছে ওই এলাকার প্রতিটি ঘরবাড়ির চারপাশ। সকলেই পানি দিয়ে হেঁটে প্রয়োজনীয় কাজে ও গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারনে পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। একদিকে করোনার মতো মহামারি অন্যদিকে পঁচা পানির ভয়াবহতায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ওই দুই এলাকার ৩ শতাধিক পরিবার। এলাকাবাসী তাদের কষ্টের পরিত্রাণ চায়।
সাতভাইয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর এই এলাকায় কখনো এমন পঁচাপানির কবলে পড়েনি মানুষ। একটি সরকারী হালট ছিলো যেখান দিয়ে বৃষ্টির পানি সরে যেতো।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু জায়গা-জমি ভূয়া দলিলের মাধ্যমে নিজেদের নামে রেকর্ড করে ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত সমর আলীর ছেলে রুহুল আমিন, নুরুল ইসলামের ছেলে মনির হোসেন, জালাল উদ্দিনসহ একটি সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে বাউন্ডারি করে দখল করার কারনে বৃষ্টির পানি সরতে পারছেনা। যার ফলে জনগণ এ ভোগান্তিতে পড়েছে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই সাধারণ মানুষকে প্রাণনাশের হুমকি ও মামলা হামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখায়।
এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, বৃষ্টি হলে এলাকা থেকে পানি নামতে পারেনা, পানি নিষ্কাশনের নেই কোন ব্যবস্থা। দখলদাররা জায়গা দখল করে বাউন্ডারি করার কারনে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্ট হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
এদিকে পৌরসভায় সাহাপুর এলাকার লোকজনও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার শিকার। তাদের অভিযোগ এ এলাকার কোন পানি নিষ্কাশনের একটি রাস্তা রয়েছে তা বন্ধ হয়ে আছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা নস্ট হয়ে আছে। এ এলাকার ভেতরে বাড়ির লোকজন জলাবদ্ধতার ময়লা পানি ভেঙে রাস্তায় বের হতে হয়। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরবন্দী লোকজন জলাবদ্ধতা পরিত্রাণ চায়।
সাহাপুর এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান জানান, মহামারী করোনায় শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে থাকতে হয় শুষ্ক জায়গা। আমাদের এলাকায় শুষ্ক জায়গা কোথ থেকে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা ও প্রতিটি বাড়ির আঙিনা পানিতে তলিয়ে গিয়ে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়। এ এলাকার পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনেজ মেরামতে এগিয়ে আসতে হবে জনপ্রতিনিধির।
বৈদ্যেরবাজারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা: আব্দুর রউফ বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই মটর বসিয়ে পাইপ দিয়ে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশন শুরু করবো। স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশন ড্রেন করা হবে কিনা এব্যাপারে তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়েও পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সোনারগাঁও পৌরসভায় ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মধু জানান, সাহাপুর এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ মেরামতে মেয়র মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এর মেরামত করা হবে আশা করি।
সোনারগাঁও উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো: সাইদুল ইসলাম বলেন, এব্যপারে এলাকাবাসী আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেবো।
এইচএম/এইচএস