ঘরে বন্দি শিশু-কিশোররা মুক্তির স্বাদ নিচ্ছে ঘুড়ি উড়িয়ে
Published : Sunday, 3 May, 2020 at 11:41 AM Count : 432
করোনার প্রভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কোন পড়াশুনা নেই। কোভিড-১৯ বন্দি করে ফেলেছে শিশু-কিশোরদের। ঘরে বন্দি থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছে শিশুরা।
বগুড়ার আকাশে বিকেলে উড়ছে নানা রঙের ঘুড়ি। মুক্ত বাতাশে বেড়াতে না পেরে এখন তারা মনোনিবেশ করেছে মোবাইল ও আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর ওপর। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হতে না পারলেও আকাশে ঘুড়ি ওড়াতে পেরেই খুশি তারা।
শিশু-কিশোররা বিকেল হলেই বাড়ির ছাদে মুক্ত বাতাশে ঘুড়ি ওড়াতে মেতে ওঠে। অভিভাবকরা ঘরে বেঁধে রাখতে শিশুদের হাতে তুলে দিয়েছে লাটাই আর ঘুড়ি।
শিশুদের বাইরে যাবার কথা ভুলিয়ে রাখতে অভিভাবকরা বাড়ির ছাদে শিশুদের ঘুড়ি ওঠাড়ে উৎসাহ দিচ্ছেন। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শিশু-কিশোররা মোবাইলে হয় ফেসবুক অথবা গেম খেলার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখে। অভিভাবকরা তাদের মোবাইলের স্ক্রীন থেকে কিছুতেই সরিয়ে আনতে পারছেনা। অভিভাবকরা জানে সন্তানরা গৃহবন্দি থেকে হাঁপিয়ে উঠেছে। বিকেলে ঘরের বাইরে যাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। সেই আবদার থামাতে তাদের হাতে তুলে দিয়েছে লাটাই আর ঘুড়ি। সময় কাটানোর একটি উত্তম পন্থা ঘুড়ি ওড়ানো।
শিশুদের ঘুড়ি ওড়ানোর আবদারের কথা জানতে পেরে শহরে কাঠ মিস্ত্রি পল্লীগুলো আসবাবপত্র তৈরি বন্ধ করে লাটাই ও ঘুড়ি বিক্রি শুরু করেছে। শহরের রহমান নগরের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা কাঠ মিস্ত্রি পল্লী নাটাই ও ঘুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।
রহমান নগরের কাঠ মিত্রি পল্লীর আব্দুস সালাম জানান, করোনা ভাইরাসে জেলা লকডাউন হওয়ায় কাঠের খাট, চেয়ার, আলমারিসহ নানা ধরনের ফার্নিচার বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে।
কাঠ মিস্ত্রি সালাম জানান, একদিন এক শিশু নাটাই তৈরি করতে তার অভিভাবককে নিয়ে আসে। আমি তাকে ৫০ টাকায় নাটাই তৈরি করে দেই। এরপর থেকে নাটাই ও ঘুড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। ৫০ টাকার একটি নাটাই ৫০ টাকা থেকে এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। এর শিশু কিশোর ও অভিভাবকরা কাঠ মিস্ত্রি পল্লীতে নাটাই ও ঘুড়ি কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, বগড়া লকডাউন ঘোষণার পর থেকে এক এক জন মিস্ত্রি ১ লাখ টাকা করে শুধু নাটাই বিক্রি করেছে। তারা এখন পাইকারি নাটাই বিক্রি করছেন ৬০ টাকা করে। খুচরায় এসব নাটাই বিক্রি হচ্ছে। অভিভাবকদের কাছে নাটাই এর দাম বড় নয়। সন্তানদের ঘরে আবদ্ধ রাখাই মূল লক্ষ্য।
-এমএ/এমএ